সুদীর্ঘ বিমানযাত্রার মধ্যে গ্লাসের পর গ্লাস মদ খেয়ে চূড়ান্ত মাতলামি এবং অভব্যতার নজির গড়ল এক যাত্রী। এক সহযাত্রী মহিলা এবং তাঁর কিশোরী কন্যাকে যৌন নিগ্রহও করতে ছাড়েনি অভিযুক্ত। এই ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগে বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে ২০ লক্ষ মার্কিন ডলারের মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রিসের এথেন্সগামী ডেলটা এয়ারলাইন্সের একটি ৯ ঘণ্টার উড়ানে । সূত্রের খবর, অভিযুক্ত যাত্রী পরের পর মদ্যপান করেই যাচ্ছিল বিমানে। সে স্পষ্টতই মদ্যপ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেওবিমান কর্মীরা তাকে আরও মদ পরিবেশন করে চলেছিলেন। বিমানে তার পাশের আসনেই বসেছিলেন এক মহিলা এবং তাঁর ১৬ বছরের কন্যা। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় কিশোরীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। কিন্তু নাবালিকা তাতে সাড়া দেয়নি। এতেই উত্তেজিত হয়ে কিশোরীর দিকে তেড়ে গিয়ে চিৎকার করতে শুরু করে ওই যাত্রী।
সূত্রের খবর, অভিযুক্ত যাত্রী অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে নাবালিকার দিকে তেড়ে যায় এবং তার বাড়ির ঠিকানা জানতে চায়।
শুধু তাই নয়, অনুমতি ছাড়াই কিশোরীর পিঠে অশালীনভাবে হাত দিয়ে স্পর্শ করে সে। এই ঘটনা দেখে ছুটে আসেন কিশোরীর মা। তিনি স্পষ্ট করেই জানান, তাঁর সন্তান একজন নাবালিকা। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে মহিলার হাত ধরে টেনে আনে অভিযুক্ত। সঙ্গে বিকট চিৎকারও করতে শুরু করে সে।
এরপরেই ভয় পেয়ে নিগৃহীতা মহিলা বিমানকর্মীদের কাছে সাহায্য চান। অভিযোগ, তাঁর আবেদনে পাত্তা না দিয়ে উল্টে তাঁকেই শান্ত হয়ে বসতে বলে বিমানকর্মীরা। এরপর অভিযুক্ত যাত্রী চিৎকার করে জানায়, সে কানেক্টিকাটের বাসিন্দা, এবং ফের স্পর্শ করতে শুরু করে কিশোরীকে। এমনকী, বিমানে তার সামনের আসনগুলোতেও লাথি মারতে শুরু করে সে।
জানা গেছে, ঘটনাটি এখনের নয়। ২০২২ সালের ২৬ জুলাই এই ঘটনা ঘটেছিল। তবে সেটি সামনে এসেছে সম্প্রতি। তা নিয়ে আদালতে মামলাও ওঠে। এতকিছুর পরেও নাকি বিমান সংস্থার তরফে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনওরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাদীপক্ষের আইনজীবী ইভান ব্রুস্টেন জানিয়েছেন, ওই মহিলা এবং তাঁর নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে বিমানের ভিতর যা হয়েছিল তা দুঃস্বপ্ন বললেও কম বলা হয়। শুধু তাই নয়, বিমানকর্মীরা চাইলে এই ঘটনা আটকানো যেত বলেও দাবি করেছেন তিনি।
এরপরেই নিউইয়র্কের পূর্ব ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে কুড়ি লক্ষ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা দায়ের করেন মহিলা। যদিও এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডেলটা এয়ারলাইন্সের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও যাত্রীর অভব্য আচরণের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’নীতি মেনে চলে তারা। ‘যাত্রী সুরক্ষার থেকে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে আর কিছু নয়,’ জানিয়েছে তারা।