গত পাঁচ বছরে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ২৮ হাজার ২৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯ হাজার ৫২২ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে ৫৮ হাজার ৭৯১ জন। এর মধ্যে হতাহত হয়েছে ৩ হাজার ৯৪১ জন শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) নিরাপদ সড়কের দাবিতে তরুণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ তরুণ শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের পরে আওয়ামী লীগ সরকার তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার করলেও এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের সব দাবিদাওয়া মেনে নিলেও এর কোনোটি বিগত পাঁচ বছরে বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য তাজা প্রাণ ঝরছে। সড়কের বিশৃঙ্খলায় যানজটে আটকে পড়ে মানুষের হাজারো কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সরকারের পরিকল্পনার গলদে ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন ও ছোট ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বাড়লেও সরকার নানান মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমছে বলে জাহির করে জনগণের সঙ্গে তামাশা করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তড়িঘড়ি করে নতুন সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ পাস করা হলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকনেতাদের নানান বাধা ও পুরোনো পদ্ধতিতে এই আইন প্রয়োগের ফলে এই সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। তরুণ শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন নীতিনির্ধারকদের চোখ খুলে দিয়েছে বলে যাঁরা জানিয়েছিলেন, ধীরে ধীরে তাঁরা আবারও ঘুমিয়ে পড়েছেন। ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বেপরোয়াভাবে বেড়েছে। সঠিক নেতৃত্ব ও গবেষণার অভাবে সরকার সড়ক নিরাপত্তা ও সড়কের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় বারবার ব্যর্থ হচ্ছে দাবি করে অনতিবিলম্বে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে দায়েরকৃত সব ধরনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।