দখলদার ইসরায়েলের ক্রমাগত আগ্রাসনের দরুন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। ফিলিস্তিনী ভূখন্ডে ইসরায়েলি অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো এবং সেখানে ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য স্থায়ী শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতকল্পে নিরাপত্তা পরিষদে এতদসংক্রান্ত গৃহীত রেজুল্যুশন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোর আহবান জানাই”- আজ মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ও ফিলিস্তিনী প্রশ্নে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত বিতর্কে ওআইসি গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এমন মন্তব্য করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
বক্তব্য প্রদানকালে রাষ্ট্রদূত মুহিত সাম্প্রতিককালে জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এই আগ্রাসনের ফলে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এবং গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংসের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত দ্ব্যর্থহীনভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের এই ক্রমাগত আগ্রাসনের প্রতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, এই ধরনের আগ্রাসন শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না বরং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলিতে তাদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয়, তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনাকে ব্যহত করে এবং সর্বোপরি তাদের মানবিক মর্যাদাকে গুরুতরভাবে অবমাননা করে।
স্থায়ী প্রতিনিধি মুহিত ইসরায়েলের এই আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার উপর জোর প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, জবাবদিহিতার অভাব ইসরায়েলকে ক্রমাগতভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে উৎসাহিত করছে। ওআইসির পক্ষ থেকে তিনি ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরায়েলি অবৈধ বসতি স্থাপনের সমস্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল কর্তৃক সংঘটিত অপরাধের সম্পূর্ণ, স্বচ্ছ এবং স্বাধীন তদন্তের দাবি জানান। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের রেজুল্যুশন ৯০৪ (১৯৯৪) এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনসংখ্যার সুরক্ষার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে প্রদত্ত সুপারিশসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফিলিস্তিনি জনগণের সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান।
ওআইসি’র প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি রাষ্ট্রদূত মুহিত বাংলাদেশের জাতীয় বক্তব্যও প্রদান করেন। প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটল ও অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি একটি স্বাধীন, টেকসই ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষার ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান অর্জনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।