২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০১:৫১:১৯ পূর্বাহ্ন


প্রথমবারের মত ডাচ সুন্দরী হল ট্রান্সজেন্ডার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৭-২০২৩
প্রথমবারের মত ডাচ সুন্দরী হল ট্রান্সজেন্ডার ডাচ ট্রান্সজেন্ডার রিকি কোলে। ছবি: সংগৃহীত


নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত সুন্দরী প্রতিযোগিতায় এবার বিজয়ী হয়েছেন ছেলে হিসেবে বেড়ে ওঠা রিকি কোলে। ২২ বছর বয়সী রিকি একজন ট্রান্সজেন্ডার। ডাচ বন্দর নগরীতে ছেলে হিসাবে বেড়ে ওঠা রিকি একজন নারী হয়ে উঠেছেন। তিনিই দেশটির প্রথম ট্রান্সজেন্ডার যিনি মিস নেদারল্যান্ডস জিতেছেন। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

দুই সপ্তাহ আগে এক জমকালো অনুষ্ঠানে মিস নেদারল্যান্ডসের মুকুট জয় করে নেন রিকি কোল। বিজয়ী ঘোষিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের দেয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সত্যিই এটা আমার বছর। এটা আমার কাছে একটা বড় স্বীকৃতি। ৯৪ বছর পর প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবে এই খেতাব জেতাটা ছিল সবচাইতে সুন্দর মুহূর্ত।’ এছাড়া মিস নেদারল্যান্ডস প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা বলেন, ‘রিকি কোলের জীবনে এই অর্জনের পিছনে রয়েছে স্পষ্ট লক্ষ্যসহ শক্তিশালী একটি গল্প’।

আগামী নভেম্বরে এল সালভাদরে অনুষ্ঠেয় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিত্ব করবেন রিকি। ২০১৮ সালে স্পেনের প্রতিনিধিত্ব কারী অ্যাঞ্জেলা পন্সের পর রিকিই হবেন দ্বিতীয় ট্রান্সজেন্ডার নারী যিনি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। 

এ ব্যাপারে রিকি বলেন, ‘প্রথম ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে আমার মিস ইউনিভার্স জেতার স্বপ্ন ছিল। এবার আমি কেবল অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে যাচ্ছি।’

মিস নেদারল্যান্ডস জয়ী ঘোষিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন নেতিবাচক বার্তার পাশাপাশি হুমকিও পেয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ তাকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন বলে জানায় এই নেদারল্যান্ডস সুন্দরী । 

এ বিষয়ে রিকি বলেন, ‘প্রথমদিকে প্রতিক্রিয়াগুলো ইতিবাচক ছিল তবে পরবর্তীতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও এসেছে। আমার বিশ্বাস, এসব বার্তা বেশিদিন টিকবে না। আমি শুধুমাত্র ভালো বিষয়গুলোর দিকে গুরুত্ব দিতে চাই'।

রিকি আরও বলেন, ‘আমি সব সময় নিজের বেছে নেওয়া পথেই চলেছি এবং এটিই আমাকে এই পর্যায়ে আশতে সাহায্য করে, যা আমি সত্যিই হতে চেয়েছিলাম।’ তিনি আশাবাদী যে তিনি অন্যদের জন্য বিশেষ করে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের তরুণদের জন্য একজন আদর্শ মানুষ হয়ে উঠবেন।

নেদারল্যান্ডসের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডেন হেল্ডারে বাস করেন রিকি কোলে। শহরটিতে ছেলে হিসেবে বেড়ে ওঠা খুব একটা সহজ ছিল না রিকির জন্য। তবুও মা ও বাবার সমর্থন নিয়ে তিনি মাত্র ১২ বছর বয়সেই বয়ঃসন্ধি প্রতিরোধের চিকিৎসা শুরু করেছিলেন। এরপর ১৬ বছর বয়সে তিনি নারী হরমোনের চিকিৎসা শুরু করেন। রিকি বলেন, ‘একটি অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমার রূপান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়। অস্ত্রোপচারের পরই আমি নারী হিসেবে অনুভব করতে পারি, যা আমাকে চিরকালের জন্য মুক্তি দিয়েছে।’

গত জানুয়ারিতে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা একটি ছবি পোস্ট করে রিকি লিখেছিলেন, ‘আমি ছোট্ট রিক হিসেবে জন্মেছিলাম। কিন্তু ওই ছোট্ট রিকই রিকি হতে চেয়েছিল সবসময়।' নিজের এই রূপান্তরের যাত্রা অনেক দীর্ঘ ও কঠিন ছিল জানিয়ে রিকি আরও বলেন, ‘এই পথ শেষ হবে না কখনোই। আমি সব সময় ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবেই থাকব। তবে এটা এখন সমাজে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। আমার বিশ্বাস, সবাই বিষয়টি বুঝতে পারবে যে বিষয়টি স্বাভাবিক। আমরা সবাই কেবল মানুষ।’