এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর অনেক দেশ থেকে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। তবে জাপান ২০২৬ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে। এটি আরও বাড়িয়ে ২০২৯ সাল পর্যন্ত সুবিধা দিতে প্রস্তাব দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
সোমবার (২৪ জুলাই) জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরাকে নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর অনেক দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এজন্য জাপানকে ২০২৬ সালের পর আরও তিন বছর শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রস্তাব দেয়া হবে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাপান দীর্ঘদিনের বন্ধু উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মেগা প্রকল্প শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনাতেও থাকবে জাপান।
এছাড়া দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) কাজ চলমান আছে বলে জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে।
এর আগে সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ সফরের অংশ হিসেবে তৃতীয় টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি দেখতে শাহজালাল বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো দুইদিনের সফরে এসেছেন নিশিমুরা। এর আগে রোববার (২৩ জুলাই) সকালে বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার মহাপরিচালক তৌফিক হাসান। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ-জাপান ইকনোমিক রিলেশনস ফর দ্য নেক্সট ফিফটি ইয়ার্স: ফর দ্য ইন্ডাস্ট্রি আপগ্রেডেশন অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেন ইয়াসুতোশি নিশিমুরা।
সে সময়ে তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ অকল্পনীয় উন্নতি করেছে। এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের জন্য।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভিত অনেক গভীর। যমুনা সেতু থেকে শুরু করে মেট্রোরেল, থার্ড টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত প্রতিটি অবকাঠামোগত মাইলফলক জাপান-বাংলাদেশ পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে নিশিমুরা বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় দেশ। বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করতে জাপান প্রস্তুত।