২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০১:২৬:৪৮ অপরাহ্ন


চাকুরি, ফ্লাট, গাড়ি'র প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক শামীনুর রহমান গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৭-২০২৩
চাকুরি, ফ্লাট, গাড়ি'র প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক শামীনুর রহমান গ্রেফতার চাকুরি, ফ্লাট, গাড়ি'র প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক শামীনুর রহমান গ্রেফতার


চাকুরি, ফ্লাট, গাড়ি'র প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক ও ৯টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী শামীনুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

বুধবার (১৯ জুলাই) ফেনী জেলার পরশুরাম থানাধীন অনন্তপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার প্রতারক শামীনুর রহমান (৩৮), সে  ফেনী জেলার পরশুরাম থানাধীন পূর্ব অলকা এলাকার ফিরোজ আহম্মদের ছেলে। 

বৃহস্পতিবার র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, গত (২৩ মার্চ ২০২১) সৌদি প্রবাসী ভুক্তভোগীর ভাগিনা রবিউল করিমের মাধ্যমে প্রতারক শামীনুর রহমানের সাথে তার পরিচয় হয়। প্রতারক শামীনুর রহমান ভুক্তভোগীর স্বাক্ষর জাল করে একশত টাকার ৩টি নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে অঙ্গীকারনামা তৈরী করে মিথ্যা ও অভিনব অভিযোগ সাজিয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই অঙ্গীকারনামায় (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০) তারিখ উল্লেখ করা হয় যা শামীনুর রহমানের সাথে ভুক্তভোগীর পরিচয় হওয়ারও ১বছর পূর্বের। ভূক্তভোগীর স্বাক্ষর জালের অভিযোগটি চ্যালেঞ্জ করে চলতি বছরের (৬ ফেরুয়ারি ২০২৩) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও পরশুরাম আমলী আদালতে ন্যায় বিচারের জন্য স্বাক্ষর পরীক্ষা করার জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে উক্ত আদালত কর্তৃক সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রিপোর্ট সংগ্রহ পূর্বক পরবর্তী ধার্য্য তারিখের মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করার জন্য ফেনীর বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার (সিআইডি)’কে নির্দেশ প্রদান করেন। 

এছাড়াও শামীনুর রহমান মংলা কাস্টমস হাউজের নিলামকৃত বিভিন্ন মডেলের গাড়ি কম দামে ক্রয় করে দিবে বলে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ব্যাংক ডিপোজিট স্লীপের মাধ্যমে ও নগদ এবং বিকাশে সর্বমোট ৬০ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে শামীনুর গাড়ি ডেলিভারী না দিয়ে ভুক্তভোগীর টাকাগুলো আত্মসাৎ করে। গত (৭ অক্টোবর ২০২১) হাতাতো টাকাগুলো পরিশোধের অঙ্গীকার করেও সে টাকা পরিশোধ না করে স্ট্যাম্পে ভুক্তভোগীর স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া ডকুমেন্টস তৈরি করে।

ঘটনার বিবরণে আরো জানা যায়, শামীনুর রহমানের কথিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান 'মেসার্স আবদুল্লাহ সাঈদ রাইস এন্ড সন্স” নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ভূয়া নাম ব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে একাধিকবার জেল-জরিমানা হয়েছে। সে একজন শীর্ষস্থানীয় প্রতারক হিসেবে দেশের বিভিন্ন আদালতে ও থানায় বিভিন্ন প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় বহুবার কারা বাস করেছে। তার নির্দিষ্ট কোনে আয়ের উৎস না থাকা সত্ত্বেও সে ফেনী জেলার পরশুরামের পূর্ব অলকা গ্রামে কোটি টাকা ব্যয়ে বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। শামীনুর রহমান একজন চিহ্নিত বখাটে প্রতারক এবং সুকৌশলে মানুষকে ফুসলিয়ে চাকুরি, ফ্লাট, গাড়ি ইত্যাদি’র প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার নামে। এছাড়াও ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, বাগেরহাট ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নজিরবিহীন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার। ভুক্তভোগী ব্যক্তি প্রতারক শামীনুর রহমানকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাবের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন।

এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, প্রতারণা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী ও প্রতারণা চক্রের মূলহোতা শামীনুর রহমান ফেনী জেলার পরশুরাম থানাধীন অনন্তপুর এলাকায় অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বুধবার (১৯ জুলাই) বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী প্রতারক শামীনুর রহমানকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে একাধিক প্রতারণা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে। সে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে সৌদি আরব এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপনে ছিলো বলেও স্বীকার করে।

উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনায় গ্রেফতার আসামী শামীনুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতারণা সংক্রান্তে এনআই এ্যাক্ট এর সিআরে ফেনী জেলায় ৬ টি, খাগড়াছড়ি জেলায় ২ টি ও কুমিল্লা জেলায় ১ টি মামলাসহ সর্বমোট ৯ টি প্রতারণা মামলার তথ্য পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।