২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:২৯:০৬ পূর্বাহ্ন


সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নিতে স্থায়ী হচ্ছে শিক্ষা বোর্ডের ক্ষমতা
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৭-২০২৩
সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নিতে স্থায়ী হচ্ছে শিক্ষা বোর্ডের ক্ষমতা File Photo


মহামারিসহ যে কোনো দৈবদুর্বিপাকে সংক্ষিপ্ত পরীক্ষার গ্রহণের সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০২৩-এর খসড়া চূড়ান্ত করে পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ১৯৬১ সালের প্রণীত আইনের অধীনে বর্তমানে শিক্ষা বোর্ড পরিচালিত হচ্ছে। তবে বিগত করোনা মহামারী সময়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এবং স্বল্প সময়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে গিয়ে জটিলতায় পড়ে শিক্ষা বোর্ডগুলো। সেই জটিলতার স্থায়ী নিরসন এবং বোর্ডগুলোকে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রেখে এবারে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।

খসড়া আইনের ১৭ অনুচ্ছেদে বোর্ডের দায়িত্ব ও কার‌্যাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। এর ৩ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব না হলে সরকারের অনুমোদনক্রমে বোর্ড কর্তৃপক্ষ প্রজ্ঞাপিত আদেশের মাধ্যমে নির্দিষ্ট বছরের পরীক্ষা গ্রহণ, মূল্যায়ন, ফল প্রকাশ এবং সনদ প্রদানের নির্দেশ জারি করতে পারবে।

করোনা মহামারীর অভিজ্ঞতা থেকে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি জানান, ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে ১৯৬১ সালের অর্ডিন্যান্সটি যুগোপযোগী করে ইংরেজি থেকে বাংলা করা হয়েছে।

আমাদের সময়কে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের বেশকিছু বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। সেই বাস্তবতা থেকে দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। ১৯৬১ সালের অর্ডিন্যান্সের বদলে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন তৈরি করা হয়েছে। আইনে মহামারী অবস্থায় শিক্ষা বোর্ডগুলোকে সংক্ষিপ্ত আকারে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করতে স্থায়ীভাবে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটি আগে অস্থায়ীভাবে করা হলেও সেটি নতুন আইনে স্থায়ী করা হয়েছে।’

জানা গেছে, অনেক আগে এ আইনের সংশোধনী মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে আরও কিছু সংশোধনী যোগ করতে বলা হয়। এর জেরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা করে নতুনভাবে তা সংশোধন করা হয়। পরে তা আবারও মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৯৬১ সালের ইস্ট পাকিস্তান ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী দেশের আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড পরিচালিত হচ্ছে। সর্বশেষ ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়। নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজি ভাষায় প্রণীত আইনের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংশোধন করে বাংলা ভাষায় প্রণয়নের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও অন্যান্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একই কাঠামোতে পরিচালনার উদ্দেশ্যে শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত হবে। আইনে বলা হয়েছে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি হবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা এবং মাধ্যমিক শিক্ষা হবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত।

নতুন আইনের খসড়ায় আরও বলা হয়েছে- মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড তহবিল থাকবে। এই আইনে আদায়কৃত ফি, বোর্ডের প্রাপ্ত দান, উপহার অথবা নিজস্ব সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা থেকে আয় এবং সরকার থেকে যে কোনো উৎস থেকে প্রাপ্ত আয় সরকারি ব্যাংকে জমা প্রদান করার কথা বলা হয়েছে। এই তহবিল ব্যবহারের নির্দেশনাও রয়েছে আইনে।