পদ্মা সেতুতে অবশেষে ট্রেন চলাচল করবে আগামী জুলাই মাসে, কিন্তু তার আগে পরীক্ষামূলকভাবে সেতু দিয়ে ট্রেন (ট্রাক কার) চালানো হবে ৩০ মার্চ। ওইদিন মাওয়া রেলস্টেশন থেকে শুধুমাত্র পদ্মা সেতু ওপর দিয়ে ট্রাক কার ট্রেনটি পার হয়ে ভাঙ্গা প্রান্তের ১০-১৫ কিলোমিটার যাবে বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন। এদিন ট্রাককার ইঞ্জিন ও মালবাহী বগি দিয়ে আমরা ট্রায়াল রান করাবো, কেননা রেলের ইঞ্জিন, বগি ইত্যাদি আমাদের এখানে নেই। এটা রেলওয়ের বিষয়। তবে যেদিন ট্রাককারটি মাওয়া থেকে ভাঙ্গা প্রান্তে যাবে সেদিন রেলমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন আফজাল হোসেন।
বুধবার (১৫ মার্চ) ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ৪২ কিলোমিটার রেলপথের অগ্রগতি এখন ৯২ শতাংশের বেশি। আর পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন রেলপথ বসবে ছয় দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। এরই মধ্যে ছয় কিলোমিটারের বেশি রেলপথ বসে গেছে। বাকি মাত্র ৩০০ মিটার। পাথরবিহীন রেললাইন বসানো হচ্ছে মাওয়া প্রান্ত থেকে। জাজিরা প্রান্তের কাজ শেষ। আর মাওয়া প্রান্ত থেকে ট্র্যাককারে করেই স্লিপারসহ অন্যান্য মালামাল সেতুতে সহজে ঢুকতে পারছে। তাই দ্রুত রেললাইন বসানো সম্ভব হচ্ছে। সেতুর ওপর তলায় সড়কপথের যানবাহন সচল রেখেই দেশের প্রথম পাথরবিহীন ব্রডগেজ রেললাইন স্থাপন করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন বসানো সম্ভব হবে। কিউরিংয়ের পর রেল চলাচলের উপযোগী হবে। তাই সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রাককার দিয়ে রেল চালানোর জন্য ৩০ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে । তবে এটা নির্ভর করবে কবে রেলমন্ত্রী আমাদের সময় ও অনুমতি দেবেন। কেননা তিনি ওইদিন পদ্মা সেতুর ওপর ট্রাককারে অবস্থান করে মাওয়া প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা প্রান্তে যাবেন। উনি যদি সময় দেন তবে ৩০ মার্চ আমরা ট্রাক কার দিয়ে ট্রেন চালাবো।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, তবে ফাইনালি (অবশেষে) আগামী জুলাই মাসে আমরা রেল চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কেননা ট্রাক বসানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে হলেও আমাদের স্টেশনগুলো এখনো নির্মিত হয়নি। এটাসহ সিগনালিং ব্যবস্থাসহ টুকিটাকি কাজ করতে সময় লাগবে। আগামী জুনে ট্রেন চলবে বলে আমরা আশা করছি।
রেলের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন এই রেললাইন শত বছর টেকসই হবে। তা ছাড়া তৈরি করা হচ্ছে মজবুত করে। আর আধুনিক এই রেললাইনের সংস্কার ব্যয়ও তেমন হবে না। তাই দেশের নতুন রেল নেটওয়ার্ক ঘিরে নানামুখী সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে। আশা করছি, পদ্মা সেতুতে আগামী ৩০ মার্চ পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।