আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপানি দুই শিশু এ মুহূর্তে যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
এদিন আপিল বিভাগ জানিয়েছেন, সব সমস্যার সমাধান আদালতে হয় না। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, যখন সন্তানদের ঘিরে ছাড় দিতে নারাজ বাবা-মা উভয়ই; তাই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিশুরা বাইরে যেতে পারবেন না।
আদালতের অনুমতি ছাড়া জাপান থেকে আসা দুই শিশুকে দেশের বাইরে না নেয়ার বিষয়ে, আপিল বিভাগের আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে এবং শিশুদের বাবার বিরুদ্ধে আদালত অবমানার অভিযোগে শিশুদের মা এরিকো পৃথক আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপানি দুই শিশু এ মুহূর্তে যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকবে বলে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপানি দুই শিশুর মধ্যে ছোট শিশু নাকানো লায়লা লিনা বাবার কাছে একদিন ও মায়ের কাছে একদিন করে থাকবে। আর বড় মেয়ে থাকবে মায়ের হেফাজতেই। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিকে দুই সন্তানকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবারও উচ্চ আদালতে আপিল করেন মা এরিকো।
গত ২৯ জানুয়ারি পারিবারিক আদালত দুই শিশু মায়ের কাছে থাকবে বলে রায় দেন। পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ইমরান শরীফ।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানে এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান ইমরান শরীফ জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। ১২ বছরের সংসারে তাদের ঘরে আসে তিন কন্যাসন্তান। তবে স্ত্রীকে ডিভোর্সের চিঠি দেয়ার পর সন্তানদের কাস্টডি নিয়ে জাপানের পারিবারিক আদালতে শুরু হয় মামলা।
জাপানের পারিবারিক আদালতে স্ত্রীর কাছে সন্তানদের হেফাজত হারায় বাবা ইমরান শরীফ। ২০২১ সালে গোপনে দুই মেয়ে জেসমিন মালিকা (১২) ও নাকানো লায়লাকে (১১) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে গত বছরের ৭ জুলাই ঢাকায় আসেন এরিকো। পরে সন্তানদের ঠিকানা খুঁজে বের করেন। তবে সন্তানদের জন্য বাংলাদেশে আসার পরপরই শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে না দেয়া, লোক দিয়ে হয়রানি করা হলে আদালতের দ্বারস্থ হন মা এরিকো।