লিঙ্গবৈষম্য দূর করা এবং নারীর অধিকার আদায়ে সোচ্চার ও সচেতন হওয়ার
এক উজ্জ্বল দিন ৮ মার্চ। বিশ্বজুড়ে ১৯৭৫ সাল থেকে দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক
নারী দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য
নির্ধারণ করেছে ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’।
ডিজিটাল বিশ্বকে নিরাপদ, আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সংগত করার প্রত্যয়
নিয়েই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি নানা আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপিত
হবে। এদিকে নারীদের স্বকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং তথ্যপ্রযুক্তির
সর্বোত্তম ও নিরাপদ ব্যবহারের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ‘হার
পাওয়ার’ প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আওতায় ২৫ হাজার নারী
উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং প্রত্যেককে এককালীন ২০ হাজার
টাকা করে পুঁজি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের বলরুমে গতকাল ‘উইমেন ইন বিজনেস: এমপাওয়ারিং
বাংলাদেশ ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ
তথ্য জানান। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এ আলোচনা
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব
মিশন হেলেন লাফাভে ও সেমস-গ্লোবালের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ ম্যানেজিং
ডিরেক্টর মেহেরুন এন ইসলাম।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘নারীদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও
সামাজিক অবদানকে অগ্রাহ্যের কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি তাদের
ব্যবসা-বাণিজ্যে অধিকতর সম্পৃক্ততা বাড়ানো জরুরি। তাই নীতিনির্ধারণী
পর্যায়সহ সমাজের সব ক্ষেত্রে লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করতে হবে।’
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকার কাজ
করছে জানিয়ে স্পিকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের মধ্যে
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তথা
স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ নির্মাণে
নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের এ অগ্রযাত্রায় নারীদেরও
এগিয়ে আসতে হবে। সরকার লিঙ্গসমতাভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রমও বাস্তবায়ন
করছে। স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনায় ২৫০
কোটি টাকা ব্যয়ে “হার পাওয়ার” নামে প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া
হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রয়োজনীয়
প্রশিক্ষণ এবং প্রত্যেককে এককালীন ২০ হাজার টাকা করে পুঁজি সরবরাহ করা
হবে।’
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক শক্তি হবেন
স্মার্ট নারী উদ্যোক্তারা। তাই নারীদের উৎসাহিত করতে হবে। উন্নয়নের
মূলধারায় নারীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিকভাবে
স্বাবলম্বী হতে ব্যবসায় অধিকতর নিয়োজিত হওয়া জরুরি। “ব্লু ইকোনমি”-তেও
সম্পৃক্ত হতে হবে। সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য
প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা, সুদমুক্ত ঋণসহায়তা, ব্যাংকিং সহায়তাসহ অন্যান্য
সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে। সঠিক তথ্য পাওয়ার অধিকার ও অন্যান্য
সহায়তা নারীদের জন্য বিস্তৃত করা হয়েছে। কভিড-পরবর্তী নিউ নরমাল
পরিস্থিতিতে নারীদের মেধা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।’