আগামীতে নারী ও পুরুষের পাশাপাশি ‘হিজড়া’ পরিচয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ
নেওয়া যাবে। সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ পরিচিতির জায়গায় মহিলা ও
পুরুষ লিঙ্গের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ‘হিজড়া’ শব্দটিও যুক্ত করেছে কাজী
হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ নির্বাচন
পরিচালনা বিধিমালা-২০০৮ সংশোধন করে বিধানটি সম্প্রতি যুক্ত করেছে সংস্থাটি।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে- গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর ৯৪ অনুচ্ছেদে
প্রদত্ত ক্ষমতা বলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিধিমালার ১১ বিধি অধিকতর সংশোধন
করল নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র
অংশের দ্বিতীয় খণ্ডে ১১ নম্বর বিধিটি টিক চিহ্ন দিয়ে পূরণ করতে হয়। এই
বিধিতে প্রার্থীর লিঙ্গ পরিচিতি উল্লেখ করার বিধান রয়েছে। যেখানে আগে পুরুষ
ও মহিলা ছিল, এখন যুক্ত হলো ‘হিজড়া’। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার
পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে গত ৩০
নভেম্বর সাক্ষাৎ করে ‘হিজড়া’ সম্প্রদায়ের উন্নয়ন সংগঠন ‘সুস্থ জীবন’।
সংগঠনের চেয়ারম্যান পার্বতী আহমেদ সে সময় তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে
ধরেন। একই সঙ্গে দাবি তোলেন- ‘জাতীয় সংসদে নারী আছে, পুরুষ আছে, আমরা কই?
কাজেই আমাদের একজন দরকার।’ ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই বৈঠকের পর কমিশন
বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে। পরে আইনে কীভাবে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সে
বিষয়টিও খুঁজে বের করেন। যার ফলে আনা হলো সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায়
সংশোধন। এ সংশোধনের ফলে হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব পরিচয়েই
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র থেকেও যেমন
তারা প্রার্থী হতে পারবেন, তেমনি দল থেকেও এ পরিচয়ে প্রার্থী হতে পারবেন।
এদিকে সংসদ নির্বাচনের বিধিমালায় এ সংশোধন আনা হলেও জেলা পরিষদ নির্বাচন,
সিটি করপোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালায় এখনো
বিষয়টি যুক্ত করা হয়নি।