ধনী-গরিব নির্বিশেষে দেশের সব বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাকে নিজ জমিতে (ভিটা) একতলা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদি কারও ভিটা না থাকে, তাহলে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করে খাসজমিতে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। একতলাবিশিষ্ট প্রতিটি বাড়িতে দুটি বেডরুম, একটি ড্রইং ও একটি ডাইনিং, দুটি বাথরুম এবং একটি বারান্দা থাকবে। আড়াই ডেসিমেল জমিতে ৭৩২ বর্গফুট আয়তনের একেকটি ভবনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত ৪৭৩ জনের প্রত্যেককেই এই বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ১৪ হাজার বাড়ি নির্মাণের জন্য ‘বীরনিবাস’ প্রকল্প গ্রহণ করেছিল, পরে প্রকল্পটি সংশোধন করে ৩০ হাজার অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীরনিবাস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আলোকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় পাঁচ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছে নবনির্মিত পাঁচ হাজার বীরনিবাসের চাবি হস্তান্তর করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় এবার ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব বীরাঙ্গনাকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সমকালকে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের স্বার্থে বীরাঙ্গনারা অনেক বড় ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাঁদের অবদান কখনোই ভোলা যাবে না। বীরাঙ্গনা অনেকে এখনও দুঃখকষ্টের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব বীরাঙ্গনাকে নিজ ভিটায় বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। যাঁদের জমি নেই, তাঁদের বাড়ি নির্মাণের জন্য সরকার জমিও বরাদ্দ দেবে।
দেশে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৩। এর মধ্যে বিভিন্ন বাহিনীসহ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ৬ হাজার ৩৯৯ জন। বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা হচ্ছে ৪৭৩।