গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ভোট বাতিলের ক্ষমতাসংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাবে সায় দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। সে সুবাদে ভোটে অনিয়ম করে কেউ জয়ী হলে এবং সেই নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হওয়ার পরও তা বাতিলের ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরপিও সংশোধনের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘বিদ্যমান আরপিও অনুযায়ী ফলাফলের গেজেট হয়ে যাওয়ার পর ইসির আর কিছু করার নেই। ফলাফল প্রকাশের পরও প্রয়োজনে যেন তা বাতিল করার ক্ষমতা কমিশনের হাতে থাকে, সে প্রস্তাব আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিলাম। এটি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছিলেন, বিদ্যমান আইন দিয়েই তা সম্ভব। কিন্তু আসলে তা সম্ভব নয়।’
ময়মনসিংহের দুর্গাপুরের একটি ঘটনা টেনে তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহের দুর্গাপুরে একটা নির্বাচনে বোধ হয় ব্যালট ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল। তখন কমিশন গেজেট হওয়ার পর ভোট বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন, গেজেট হওয়ার পর কমিশনের করার কিছু থাকে না। এ রকম পরিস্থিতি যদি সামনে আসে, কমিশনের হাতে অবশ্যই একটা ক্ষমতা থাকা উচিত।’
ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের যারা বৈঠকে ছিলেন তারা ইসির “জাস্টিফিকেশনে” খুশি। তারা বলছেন, আর কোনো অসুবিধা নেই। এখন আরপিও সংশোধনের খসড়া মন্ত্রিসভায় যাবে। এরপর সংসদে যাবে। ওনারা যদি মনে করেন কোনটা রাখব, কোনটা রাখব না, এতে তো কারোর কিছু বলার নেই। এটা আইন মন্ত্রণালয়েরও প্র্যাকটিক্যালি কিছু করার থাকবে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ইভিএমে অনেকের আঙুলের ছাপ মেলে না। এ ধরনের ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার আঙুলের ছাপ ব্যবহারের বিষয়টি নির্ধারিত করে দেয়ার প্রস্তাব ছিল ইসির। আইন মন্ত্রণালয় বলেছে, এটা বিধিমালা দিয়ে করা সম্ভব। মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসিনি। প্রত্যেক ভোটের আগে আমরা সার্কুলার দিয়ে দিতে পারব। কমিশন যখন সার্কুলার দেয় সেটাও কিন্তু আইন। আমরা আরপিওতে পাচ্ছি না, তবে বিধি দিয়ে করতে পারব। আমরা সার্কুলার দিয়েই আগে করেছি। একটা পরিপত্র দিয়ে দিলেই হবে।’
ভোটে সাংবাদিকদের দূরে রাখার বিষয়ে কমিশনার বলেন, ‘সাংবাদিকদের দূরে রাখতে চাই না। রংপুরে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা আমরা দিইনি। কোথা থেকে যে হলো আমি নিজেও জানি না। হয়তো আগের কোনো নির্দেশনায় ছিল। সম্ভবত মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছিল। আমরা আপনাদের জন্য আরপিওতে ব্যবস্থা রাখছি। যন্ত্র কেড়ে নিলে শাস্তির প্রস্তাব করেছি।’