০৩ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১২:৩৫:০৪ পূর্বাহ্ন


ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের কলেরার টিকা দেওয়া শুরু
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৩-২০২৩
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের কলেরার টিকা দেওয়া শুরু ফাইল ফটো


স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) তত্ত্বাবধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস ও আইসিডিডিআর,বি-র বাস্তবায়নে ভাসানচরে পুনর্বাসিত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মুখে খাওয়ার কলেরার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এই কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এবং আইসিডিডিআর,বি-র ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর ড. ফিরদৌসী কাদরী। এ সময় নোয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, আইসিডিডিআর,বি এবং ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালী জেলার অন্তর্ভুক্ত ভাসানচরে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করা শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৩২ হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে পুনর্বাসন করা হয়েছে। তুলনামূলক উন্নততর পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও আবাসন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ২০২১ সালের জুনে ভাসানচরে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে এবং প্রায় ১ হাজার ৫০০ রোহিঙ্গা আক্রান্ত হন এবং ৪ জন মৃত্যুবরণ করেন। এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ভাসানচরে কলেরার টিকাদান কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেয় সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, আইসিডিডিআর,বি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্য উন্নয়ন সহযোগীরা।

এই উদ্যোগ সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সম্ভাব্য সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।‌ সেই ধারাবাহিকতায় তাদের জন্য আমরা কলেরার টিকার সংস্থান করেছি। আমাদের লক্ষ্য প্রতিরোধক্ষম রোগ থেকে তাদের নিরাপদ রাখা।’ তিনি এই টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আইসিডিডিআর,বি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ড. ফিরদৌসী কাদরী বলেন, ‘২০১৭ সালে যখন মিয়ানমারের নিপীড়ন এড়াতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ ডোজ কলেরার টিকা দেওয়া হয়েছে। আর এ কারণেই সম্ভাব্য কলেরার বড় রকমের প্রাদুর্ভাব সংঘটিত হয়নি। আমাদের এই সফলতা পৃথিবীর অন্যান্য স্থানেও ছড়িয়ে পড়বে বলে আমি আশাবাদী।’

আইসিডিডিআর,বি জানায়, ভাসানচরের ২৫টি কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রথম ডোজ কলেরার টিকাদান কার্যক্রম সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে বুধবার ১ মার্চ পর্যন্ত সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ১৯ মার্চে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কমপক্ষে ১৪ দিন অন্তর দ্বিতীয় ডোজের টিকা দিতে হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ইউবায়োলোজিক্স কো. লিমিটেডের তৈরি ইউভিকল প্লাস নামের কলেরার টিকা এক বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সীদের দেওয়া হচ্ছে। এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত। এক বছরের কম বয়সী শিশু, যারা বিগত ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনও টিকা গ্রহণ করেছে এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী  ব্যতীত সবাই এই টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। এই টিকা নেওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনও টিকা নেওয়া যাবে না।