২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১২:৪৬:০৭ অপরাহ্ন


নাটোরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০১-২০২৩
নাটোরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ নাটোর জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তদন্তে যান সংশ্লিষ্টরা।


ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও মারধর এবং এমপিও হওয়ার পর আটজন শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী দিয়ার নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদ হোসেন আকবরের বিরুদ্ধে।

তিন মাস ধরে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসারের পক্ষ থেকে অভিযোগগুলোর তদন্ত করা হলেও এখনও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে টানা আন্দোলন করছে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।

তবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাবি, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী দিয়ার নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে যৌন হয়রানি, বিদ্যালয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আসা, শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছে ঘুষ দাবিসহ নানা অভিযোগে ধারাবাহিক আন্দোলন করছে।

প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ শাস্তির দাবিতে তিন মাস ধরে বিক্ষোভ মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রীরা। সবশেষ ১২ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে জেলা শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ে এলে তাকে ঘেরাও করে ছাত্রীরা। এ সময় ছাত্রীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।

শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রধান শিক্ষক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিদ্যালয়ে আসেন এবং তাদের বাজে ইঙ্গিত করেন। আর অভিভাবক আব্বাস আলী ও আব্দুস ছাত্তার জানান, ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চান তারা।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, বহুবিবাহসহ নানা ধরনের চারিত্রিক স্খলন হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে বালিকা বিদ্যালয়ে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ।

ছাতনী দিয়ার নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুল ইসলাম জানান, গত বছরের ৬ জুলাই বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর সেখানে কর্মরত ৬ শিক্ষক ও ২ কর্মচারীর কাছে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ১৮ অক্টোবর ভুক্তভোগীরা বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

তবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি দুলাল সরকার জানান, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষককে ৩টি সভায় ডাকা হয়। পরপর ৩টি সভায় তিনি উপস্থিত না হওয়ায় ৪ জানুয়ারি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের কপি জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক খালেদ হোসেন আকবর জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ড করেননি।  বিদ্যালয়ের নতুন কমিটি গঠন হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান কমিটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

নাটোর জেলা শিক্ষা অফিসার আখতার হোসেন বলেন, ‘গত ১৮ অক্টোবর ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) নুর আহমেদ মাসুম ২৫ অক্টোবর তদন্ত করেন। তদন্ত  প্রতিবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে পাঠানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তদন্তের নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। গত ১২ জানুয়ারি জেলা শিক্ষা অফিসার পুনরায় তদন্ত করেন। খুব শিগগিরই তিনি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।’

২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে ২২৬ জন ছাত্রী লেখাপড়া করছে।