বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশ হিসেবে দেশের মেগা প্রকল্পে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করতে চাইছে কোরিয়া। ঢাকায় দুটি মেট্রোরেলসহ মেগা পাঁচ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চায় দেশটি। এই সহায়তায় কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে পৃথকভাবে পাঁচ প্রকল্পের জন্য সাড়ে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। আজ বুধবারও বৈঠক হবে। ইআরডি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইআরডি সূত্রে জানা যায়, দুই দিনের এই বৈঠকে প্রথম দিন মঙ্গলবার মেগা পাঁচ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হবে। বুধবার দ্বিতীয় দিনে প্রতিটি প্রকল্পের বাজেট বিষয় আলোচনা করা হবে। প্রকল্পগুলোর হচ্ছে- ঢাকা মেট্রোরেল লাইন-৪, সাউদার্ন রুট অব মেট্রোরেল-৫ এবং ঢাকা চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, ঢাকা রিংরোড প্রকল্প এবং মেঘনা ব্রিজ প্রজেক্ট।
সূত্র জানায়, এআরটি লাইন-৪ নির্মাণ করা হবে রাজধানীর কমলাপুর হয়ে সাইনবোর্ড এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার মদনপুর পর্যন্ত। এটি উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে তৈরি হবে। এর জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ২০৩০ সালের মধ্যে এটির নির্মাণকাজ শেষ করতে চায় সরকার। সে ক্ষেত্রে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক তাদের সহায়তার কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া ২০৩০ মালের মধ্যে রাজধানীর গাবতলী হতে দাশেরকান্দি পর্যন্ত মোট ১৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল এমআরটি-৫ নির্মাণের উদ্যাগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গাবতলী থেকে আফতাবনগর পশ্চিম পর্যন্ত ১২ দশমিক ৮০ কিলোমিটার পাতাল এবং আফতাবনগর সেন্টার থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত ৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার উড়াল মেট্রোরেল হওয়ার কথা। এই প্রকল্পের আওতায় মোট ১৫টি স্টেশনের মধ্যে ১১টি পাতাল এবং চারটি উড়াল স্টেশন নির্মাণ করা হবে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, এই মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে। ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। পূর্ণ সম্ভাব্যতা যাচাইও শেষ হয়েছে গত ৩০ নভেম্বর। বিভিন্ন সার্ভে এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইনের কাজ চলছে। ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন কাজের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। এরই মধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ভিত্তিতে মূল প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় বৈদেশিক অর্থায়ন হিসেবে সহায়তার জন্য কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা হবে। সূত্র জানায়, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ কমাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাতিল করা হলেও প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া জাপান সরকারের অর্থায়নে নির্মিত মেঘনা সেতুতে বর্তমান ক্ষতিগ্রস্ত সেতু হিসেবে পরিচিত। এই সেতুর সংস্কারসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন, এমনকি নতুন সেতু নির্মাণেও সহায়তা দিতে চায় কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক।