২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:৩৩:৩৬ পূর্বাহ্ন


যুক্তরাষ্ট্রে বিষাক্ত ইনজেকশনে মরল না মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী!
ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১২-২০২২
যুক্তরাষ্ট্রে বিষাক্ত ইনজেকশনে মরল না মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী! যুক্তরাষ্ট্রে বিষাক্ত ইনজেকশনে মরল না মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী!


সম্প্রতি মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা অ্যালান ইউজিন মিলার। তিনটি নৃশংস খুনের অপরাধে তিনি জেলবন্দী। তবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে গিয়েই ধাক্কা খেলেন কারা কর্তৃপক্ষ। মৃত্যুদণ্ডের উপায় হিসেবে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগে কাজ করল না অপরাধীর ওপর। অ্যালানকে আবার মৃত্যুদণ্ড দিতে যে উপায় বের করা হয়েছে, সেই পদ্ধতি এর আগে কখনও কোনো মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপকের ওপর প্রয়োগ করা হয়নি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা রাজ্যের একটি কারাগারে বন্দী আছেন অ্যালান। তার বিরুদ্ধে থাকা তিনটি খুনের অভিযোগ সম্প্রতি প্রমাণিত হয়েছে। তারপরই মৃত্যুদণ্ড হয় তার। 

সেখানকার কারা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, অ্যালানকে বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। কিন্তু সেই বিষ অ্যালানের শরীরে প্রবেশ করলেও তার মৃত্যু হয়নি। এমনিতেই অ্যালানের স্থূল শরীরে শিরা খুঁজে বের করতে বেশ নাকাল হতে হয়েছিল জেল কর্মকর্তাদের। অনেক কষ্টে শিরা খুঁজে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রবেশ করিয়ে কর্মকর্তারা অ্যালানের মৃত্যুর অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সেই বিষ তার শরীরে প্রবেশ করতেই যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেন অ্যালান। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগ করার সময় শরীরে আরও দু’টি সুচ প্রবেশ করানো হয়। এর মধ্যে একটিতে শরীর অবশ করার ওষুধ থাকে এবং অন্যটিতে সংজ্ঞাহীন করার ওষুধ থাকে।

যন্ত্রণাহীন মৃত্যু নিশ্চিত করতে এই দু’টি ইনজেকশন অপরাধীর শরীরে প্রবেশ করানো হয়। অ্যালানের শরীরেও প্রয়োগ করা হয় এই দুই ওষুধ। কিন্তু তার শরীরে ওষুধ দু’টি কাজ না করায় বিষের প্রভাবে তার শরীরে প্রচণ্ড জ্বালা শুরু হয়। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন অ্যালান। সঙ্গে সঙ্গে অ্যালানের শরীর থেকে ওই ইনজেকশনের সুচগুলো খুলে নেন ওখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা।

অ্যালানের আইনজীবীর অভিযোগ, ইনজেকশন প্রয়োগের কারণে অ্যালান প্রচণ্ড মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণা অনুভব করেছেন। আর তাই কোনোভাবেই আর ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না। অনেক দেশেই বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এখনও অ্যালাবামার জেলগুলোতে এই উপায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যালানকে আর বিষ প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না। এরপরই বিষাক্ত ইনজেকশনের পরিবর্তে নতুন উপায়ে অ্যালানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেল কর্মকর্তারা। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যালানকে মৃত্যুর সাজা দিতে বিষাক্ত নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া গ্যাস প্রয়োগ করা হবে।

এ বিষয়ে অ্যালাবামার বাসিন্দাদের দাবি, বিষাক্ত ইঞ্জেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার থেকে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া অনেক মানবিক।