ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ প্রকাশ্যে সমর্থনের জন্য দুজন অভিনেত্রীকে আটক করা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, আটক হওয়া ওই দুই অভিনেত্রী হলেন হেঙ্গামেহ গাজিয়ানি ও কাতায়ুন রিয়াহি।
গাজিয়ানি ও রিয়াহি দুজনই বেশ কয়েকটি পুরস্কার পাওয়া দক্ষ অভিনেত্রী। রবিবার দেশটির প্রসিকিউটর অফিসের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়।
আটক হওয়ার আগে গাজিয়ানি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে লেখেন, যাই ঘটুক না কেন, আমি সব সময় ইরানের মানুষের পক্ষেই থাকবো। এটাই মনে হয় আমার সর্বশেষ পোস্ট।
ইরনা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন ওই দুই অভিনেত্রী। আন্দোলন-বিক্ষোভে যোগসাজশও রয়েছে তাদের। জানা গেছে, তারা দুজনই মাথায় স্কার্ফ ছাড়াই জনসমক্ষে উপস্থিত হন এবং বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। সেসব বিধি তদারকির জন্য রয়েছে ইরানের ‘নৈতিকতা’ পুলিশ।
দেশটিতে নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটক থাকা অবস্থায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি মারা যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় ইরানে। দেশটিতে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ গেছে কয়েকশ মানুষের।
এর আগে আন্দোলন-বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ৯ ইউরোপীয়কে গ্রেপ্তার করার কথা জানা যায় দেশটিতে। ওই ৯ জনের মধ্যে জার্মানি, পোল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনের নাগরিকও রয়েছে।
ইরানে বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮ জন শিশু নিহত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের বয়স আট বছরেও কম।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস ইন ইরান (এইচআরএ) জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন শহরে নিহত হওয়া ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪৬ জন ছেলে এবং ১২ জন মেয়েশিশু রয়েছে।
শুধু গত সপ্তাহে নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়ে পাঁচ শিশু নিহত হয়। এদের মধ্যে নয় বছর বয়সী এক শিশুর নাম কিয়ান পিরফালাক। এ ছাড়া দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজেহ শহরে গত বুধবার ১৩ বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়।
কিয়ানের পরিবার অভিযোগ করেছে, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের পারিবারিক গাড়িতে গুলি ছুড়লে শিশুটি নিহত হয়। অবশ্য ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী দাবি করেছে, ‘সন্ত্রাসীদের’ গুলিতে ওই শিশু মারা গেছে।
সূত্র: বিবিসি