নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ২২ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন মাহাবুবুর রহমান, কিন্তু বেতন পাননি। এমপিওভুক্তির আশায় বুক বেঁধেছিলেন কিন্তু তা আজ শুধুই হতাশা। সংসারে রয়েছে অজস্র চাহিদার চাপ। তার বয়সও ফুরিয়ে আসছে। তবু পূরণ হয়নি সেই স্বপ্ন। ভাগ্যের নির্মমতার কাছে হার মেনে সেই শিক্ষকই এখন মুদি দোকানি। এক সময় বেছে নিয়েছিলেন নির্মাণ শ্রমিকের কাজ। করোনায় সেই কাজও হারিয়েছেন। এখন বাড়ির পাশে দেওয়া ছোট্ট দোকানই একমাত্র ভরসা তার। মানুষ গড়ার এই কারিগর জীবন-জীবিকার তাগিদে বেছে নিয়েছেন এই ব্যবসা। বয়সের অন্তিমলগ্নে এসে শুরু করেছেন জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়।
মাহাবুবুর রহমান নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জয়ন্তিপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী শিক্ষক । প্রায় দুই যুগ তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন ঠিকই, ভাগ্যের নির্মমতা তাকে মর্যাদার পরিবর্তে দিয়েছে তিরস্কার। এমপিওভুক্তির আশায় ছিলেন বছরের পর বছর। বার বারই ভেঙেছে আশা, পেয়েছেন বঞ্চনা। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলেও ৪৮ বছরের পুরানো তার প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়নি। এখন দোকানের সামান্য আয় দিয়েই কোনমতে ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ এবং সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান বলেন, স্ত্রী মরিয়ম বেগম, এক ছেলে, এক মেয়ে ও মা-বাবাসহ ছয় সদস্যের সংসার তার। ২০০০ সালে তিনি শিক্ষক হিসাবে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। ২২ বছর অতিবাহিত হলেও বেতন পান নি।
জয়ন্তিপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট রবিউল ইসলাম বলেন, এমপিওভুক্ত না হওয়ায় বিনা বেতনে শিক্ষকরা চাকরি করে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। সম্প্রতি সরকার ঘোষিত তালিকায় তাদের প্রতিষ্ঠানটির নাম না থাকায় আপিল করেছেন। বর্তমানে আপিলের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন। বেতন না পাওয়ায় শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান মুদির দোকান করেছেন। তার মতো শিক্ষকদের এমন করুণ পরিণতি চান না তিনি।