রাজশাহী নগরীর কাটাখালি থানার নওদাপাড়া এলাকায় স্কুল মোড়ে রয়েছে মোঃ মাসদার নামের এক ব্যাক্তির ইটভাটা।
সাবেক আ’লীগ সরকারের আমলে আ’লীগকে ম্যানেজ করে চালিয়েছে ইটভাটা। একই কায়দায় বর্তমানে স্থানীয় নেতা, গুন্ডা ও প্রশাসনকে ম্যানেজ ইট পুড়ানো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই ইট ভাটার সন্নিকটে রয়েছে দুইটি স্কুল এবং তিন ফসলি জমির বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠ। এর আগে পরিবেশ দূষণ রোধে এবং ফসলী জমি রক্ষার্থে এই ইটভাটা বন্ধে একাধীক জাতীয় ও একাধীক দৈনিক স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি এই ইটভাটা।
এই ভাটা মালিকের খুটির জোর এত বেশি যে, সেখানে সাংবাদিক দেখলে মারমুখি আচারণ করে এবং ভাটায় ঢুকিয়ে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়। ফলে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য সেখানে কোন সাংবাদিকও যেতে পারেনা। এছাড়া একাধীকবার ভাটা বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু ভাটা মালিকের ক্ষমতার কাছে তারা অসহায়। মুখ বন্ধ রাখা আর সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা ছাড়া অন্য কিছু করার নাই স্থানীয়দের। বাস্তবতা হলো নওদাপাড়ায় অবস্থিত ইটভাটার কোন লাইসেন্স নেই। নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। রাজশাহীর প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফসলের মাঠ উজাড় করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এই ইটভাটা। উর্বর জমির টপ সয়েল কেটে অবাধে এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট। প্রশাসন ও পরিবেশ দপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বছরের পর বছর চলছে এসব অবৈধ ইটভাটা।
এ ব্যপারে ইট ভাটার মালিক মোঃ মাসদার জানান, ২২ বছর যাবত আমি ইটভাটার ব্যবসা করছি। আমার কোন কাগজ পত্র নাই। শুধু আমার না, কাহারোই কাগজপত্র নাই। তবে সৌনালী ব্যাংকে বছরে ৫লাখ টাকা জমা দেই। যেটা সরকারী কোষাগারে জমা হয়।
রাজশাহী ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি সাদরুল ইসলাম বলেন, পবা উপজেলায় ৪০টির ও বেশি ইটভাটা রয়েছে। তবে কয়েকটার ছাড়পত্র রয়েছে। বাকিগুলির নাই। তাছাড়া আইনি নানা জটিলতার কারণে পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রেখেছে।
বসত বাড়ির পাশে, তিন ফসলি জমিতে এবং ফসলি জমির পাশে ইটভাটা করা যাবে না এমন প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, সরাসরি ফসলি জমিতে ইটভাটা নাই। তবে ভাটার পাশ দিয়ে জমিতে আবাদ হচ্ছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, আইনে আছে ফসলি জমিতে কোনোভাবেই ইটখোলা তৈরি করা যাবে না। তবে রাজশাহীতে অধিকাংশ ইটভাটা তৈরি হয়েছে দুই বা তিন ফসলি জমিতে। অনাবাদি ও পরিত্যক্ত জমিতে ইটভাটা করা গেলেও দেখতে হবে এতে পার্শ্ববর্তী ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কি না। এসব ইটভাটা বন্ধ করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অনুরোধ করেছি।
এ ব্যপারে চারঘাট থানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুঠো ফোনে ফোন দেয়া হয়। ফোনে রিং বাজলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যপারে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের (এডি) মোঃ কবির হোসাইনকে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, শনিবার মোহনপুরে চারঘা ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি।
কাটাখালি থানার নওদাপাড়া এলাকা অবৈধ ইটভাটার বন্ধে শিঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।