আল্লাহ তাআলা মানুষকে ক্ষমা করবেন। কারণ তিনি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। কোরআনের সেই আয়াতেও তা পরিলক্ষিত হয়। যখন হজরত আদম আলাইহিস সালামকে বেহেশত থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। তখনও আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি এতটাই দয়াপরবশ ছিলেন যে, হজরত আদম আলাইহিস সালামকে তিনি করুণার দৃষ্টিতে লক্ষ্য করে ক্ষমা প্রার্থনার কিছু কথা শিক্ষা দিয়েছিলেন। হজরত আদম আলাইহিস সালামও তা শিখে নিয়েছিলেন। বিষয়টি আল্লাহ তাআলা এভাবে তুলে ধরেন-
فَتَلَقّٰۤی اٰدَمُ مِنۡ رَّبِّهٖ کَلِمٰتٍ فَتَابَ عَلَیۡهِ ؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ
এরপর (হজরত) আদম স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, এরপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু। (সুরা বাকারা : আয়াত ৩৭)
আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে গুনা মাফের পদ্ধতি শিখিয়ে ছিলেন। যাতে বনি আদম কোনো গুনা করে ফেললেই আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে।
শয়তান হজরত আদম আলাইহিস সালামের সঙ্গে কসম খেয়ে বলার কারণে নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়েছিলেন। কারণ কোনো ব্যক্তি কসম করে মিথ্যা বলতে পারে এটা হজরত আদম আলাইহিস সালামের ধারণাও ছিল না। যা ছিল স্পষ্ট প্রতারণা। যার ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তাআলা শাস্তি স্বরূপ তাঁদের উভয়কে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিলেন।
এরপর হজরত আদম আলাইহিস সালাম পৃথিবীতে অবতরণ করার পর ৩০০ বৎসর পর্যন্ত লজ্জায় আসমানের দিকে মাথা উত্তোলন করেননি। আর এতো বেশি পরিমাণ কান্না করেছিলেন যে, তার উপমা পেশ করতে তাফসিরে এসেছে, সব নবি-রাসুলসহ সারা দুনিয়ার মানুষের চোখের পানি একত্র করা হলেও হজরত আদম আলাইহিস সালামের চোখের পানির বেশি হবে।
এ আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, বান্দা যতই অন্যায় করুক যদি আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চায় তবে আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। আর আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো চোখের পানি বিসর্জন দেয়া। আল্লাহর কাছে আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামের বিখ্যাত সেই দোয়া বেশি বেশি পড়া। তাহলো-
رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا ٜ وَ اِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَ تَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা জ্বলামনা আংফুছানা ওয়া ইন লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।’
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আমরা নিজদের উপর জুলুম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে দয়া না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২৩)
মুসলিম উম্মাহর উচিত, অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহ তাআলার কাছে তার রহমত বরকত ও মাগফেরাত কামনা করা। আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাকে তাঁর শিখানো ভাষায় ক্ষমা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।