২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ১০:০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন


অভিশাপ সম্পর্কে নবিজি (সা.) যা বলেছেন
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৮-২০২২
অভিশাপ সম্পর্কে নবিজি (সা.) যা বলেছেন ফাইল ফটো


অভিশাপ এক ভয়ানক ক্ষেপণাস্ত্র। সমাজে অনেক সময় দেখা যায়, রাগ ও ক্ষোভে একে অপরকে অভিশাপ দেয়। বাকবিতণ্ডায়, মনোমালিন্যে কিংবা সম্পর্কের টানাপোড়েনেও একে অন্যের উপর এ অভিশাপ দিয়ে থাকে। এটা যে কতোটা ভয়াবহ; আমরা অনেকেই তা উপলব্ধি করিনা। কিন্তু অভিশাপ দিলেই কি তা কার্যকরী হয়। এ সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কী বলেছেন?

না, অভিশাপ দিলেই তা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকরী হয় না। যাকে অভিশাপ দেওয়া হয় প্রথমে তার ওপর সরাসরি পড়ে না বরং এর আগে তা এদিক সেদিক আসা যাওয়া করে। আর অভিশাপ যদি সঠিক কারণে দেওয়া হয় তবে তা কার্যকরী হয় আর যদি সঠিক কারণ ছাড়া কেউ কাউকে অভিশাপ দেয় তবে তা অভিশাপকারীর ওপরই পতিত হয়। এ সম্পর্কে হাদিসের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। তাহলো-

১. হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কোনো বান্দা কোনো বস্তুকে অভিশাপ দেয় তখন ঐ অভিশাপ আকাশের দিকে অগ্রসর হয়। এরপর সেই অভিশাপের জন্য আকাশের পথকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন তা পুনরায় দুনিয়ায় দিকে ফিরে আসে; কিন্তু দুনিয়াতে আসার পথও বন্ধ করে দেওয়ায় সে ডানে বামে যাওযার চেষ্টা করে। অবশেষে অন্য কোনো পথ না পেয়ে যাকে অভিশাপ করা হয়েছে তার ওপর ফিরে আসে। তখন সেই বস্তু যদি ঐ অভিশাপের যোগ্য হয়, তাহলে তার উপর ঐ অভিশাপ কার্যকরী হয়। অন্যথায় অভিশাপকারীর উপরই তা পতিত হয়।’ (আবু দাউদ)

তবে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরস্পরকে অভিশাপ দিতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহর গজব বা জাহান্নাম দ্বারা অভিশাপ দিতেও নিষেধ করেছেন। অভিশাপ সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও যেসব কথা বলেছেন, তাহলো-

২. হজরত সামুরাহ ইবনু জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর অভিশাপ, আল্লাহর গজব বা জাহান্নাম দ্বারা অভিশাপ দিও না।’ (আবু দাউদ, বুখারি, আদাবুল মুফরাদ, তিরমিজি, মুসনাদে আহমাদ)

৩. হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, অভিশাপকারীরা (কেয়ামতে) সুপারিশকারী হতে পারবে না এবং সাক্ষীদাতাও হতে পারবে না।’ (আবু দাউদ, বুখারি, আদাবুল মুফরাদ, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

৪. হজরত ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি বাতাসকে অভিশাপ দিলো। মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এক ব্যক্তির চাদর বাতাসে ওলট-পালট হয়ে গেলে সে বাতাসকে অভিশাপ দিলো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তুমি বাতাসকে লানত করো না, কেননা সে নির্দেশপ্রাপ্ত। যা অভিশাপযোগ্য নয় কেউ তাকে অভিশাপ দিলে তা অভিশাপকারীর উপরই পতিত হয়।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

তাই আসুন, সামান্য কোনো বিষয়ের রেশ ধরে একে অন্যের প্রতি অভিশাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকি। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ কথাটি স্মরণ রাখি। তিনি বলেছেন, ‘মুমিন কখনো অভিসম্পাতকারী হতে পারে না।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে অভিশাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।