জুমার মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এ দিন এলেই মানুষ নামাজের প্রতি বিশেষ আকর্ষণবোধ করেন। যেমনটি সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে হয় না। অথচ জুমার দিনের মতো প্রতিদিনই মসজিদে আসা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের দাবি। জুমার নামাজের প্রস্তুতিতে রয়েছে বেশকিছু উত্তম কাজ ও প্রস্তুতি। কী সেগুলো?
জুমার দিনে রয়েছে কিছু সুন্নাত এবং মুস্তাহাব কাজ। যা সম্পাদনের সঠিক সময় ও আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি অনেকেরই অজানা। তাই জুমার দিন নামাজের প্রস্তুতি ও উত্তম কাজগুলোর বিবরণ তুলে ধরা হলো-
১. জুমার নামাজের হেকমত: আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের ভালোবাসা ও মুহাব্বাত বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহল্লার জামায়াতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং শহরের জন্য জুমা এবং বাৎসরিক ঈদের নামাজ, বিশ্ববাসীর মহাসম্মিলনের জন্য মক্কা হজের ব্যবস্থা করেছেন। ইহা আল্লাহর হেকমত।
২. জুমার দিনের ফজিলত: সূর্য উঠা দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন উত্তম। এ দিনে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাত দান করা হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। এবং এ দিনই কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।
৩. জুমার নামাজের হুকুম: প্রত্যেক মুসলিম বালেগ, বিবেকবান, স্বাধীন, ঘর-বাড়ি বানিয়ে একটি জনপদে স্থায়ীভাবে বসবাস করে এমন পুরুষদের উপর দুই রাকাআত নামাজ পড়া ফরজ।
৪. জুমার জন্য গোসল: জুমার নামাজের জন্য গোসল করা এবং নামাজে যাওয়ার মুস্তাহাব সময় শুরু হয় ফজরের পর থেকে শুরু হয়ে জুমার আজান পর্যন্ত। জুমার গোসল দেরী করে করা উত্তম।
৫. জুমায় যাওয়ার উত্তম সময়: জুমার জন্য যাওয়ার উত্তম সময় শুরু হয় ফজর থেকেই। তবে ওয়াজিব সময় হলো ইমামের প্রবেশের পরে দ্বিতীয় আজানের সময়।
৬. জুমার দিন সফর: কোনো প্রয়োজন ব্যতিত দ্বিতীয় আজানের পর সফর করা বৈধ নয়। প্রয়োজন- সফরের সঙ্গীর চলে যাওয়া, পরিবহন চলে যাওয়া তা হতে পারে বাস-গাড়ি, জাহাজ, বিমান ইত্যাদি।
৭. জুমার আজান: জুমার প্রথম এবং দ্বিতীয় আজানের মধ্যবর্তী সময় এমন হওয়া উত্তম যে, একজন মুসলিম যারা দূরে অবস্থান করে, ঘুমন্ত ও গাফেল তারা নামাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণপূর্বক জুমার আদব ও সুন্নাতগুলো আদায় করে নামাজের জন্য উপস্থিত হতে পারে।
৮. জুমার নামাজের সময়: জুমার নামাজের উত্তম সময় হলো সূর্য ঢলে পড়া থেকে শুরু করে জোহরের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত। তবে সূর্য ঢলে পড়ার আগেও পড়া যাবে।
৯. মাসবুক ব্যক্তির জুমা: যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে এক রাকাআত জুমা পাবে, সে দ্বিতীয় রাকাআত পড়ে জুমার নামাজ পূর্ণ করবে। আর যে এক রাকাআতে চেয়ে কম পাবে অর্থাৎ দ্বিতীয় রাকাআতের রুকু পাবে না, সে জোহরের নিয়ত করবে এবং চার রাকাআত নামাজ আদায় করবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উপরোক্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।