২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৭:৩৩:৩৯ পূর্বাহ্ন


অন্তঃসত্ত্বাকে লাথি, পাকিস্তানে গ্রেফতার নিরাপত্তারক্ষী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৮-২০২২
অন্তঃসত্ত্বাকে লাথি, পাকিস্তানে গ্রেফতার নিরাপত্তারক্ষী ফাইল ফটো


এলোপাথাড়ি মারের চোটে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলা। তাঁকে উদ্ধার করার পরে জানা গেল অত্যাচারের কাহিনি। নির্যাতিতার বয়ান ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ভিত্তিতে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচিতে গুলিস্তান-ই-জওহর ব্লকের ঘটনা।

নির্যাতিতার নাম সানা। ওই এলাকার একটি বহুতলে পরিচারিকার কাজ করেন তিনি। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন ভোর রাতে খিদে পেয়ে যাওয়ায় ছেলেকে ফোন করে কিছু খাবার নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু বহুতলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েক জন তাঁর ছেলেকে ঢুকতে বাধা দেন। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি কথা বলতে যান। তখনই বচসা বাধে জনৈক আদিল খানের সঙ্গে। আদিলের নির্দেশেই নিরাপত্তারক্ষী তাঁকে মারধর করে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখে গিয়েছে, নিরাপত্তারক্ষীর থাপ্পড়ের চোটে মহিলা মাটিতে পড়ে যান। তিনি ওঠার চেষ্টা করলে তাঁর মুখে, মাথায় লাথি মারে ওই নিরাপত্তারক্ষী। মহিলা বলেন, ‘‘আমি অন্তঃসত্ত্বা। মারের চোটে মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম। শেষে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’’

বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিন্ধু প্রদেশের মুখ্য প্রশাসনিক কর্তা মুরাদ আলি শাহ। তিনি বলেন, ‘‘দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পাকিস্তানে মহিলাদের উপরে নির্যাতনের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু মাত্র গত জুনেই ১৫৭ জন মহিলা অপহৃত হয়েছেন, শারীরিক হেনস্থার শিকার হয়েছেন ১১২ জন। ৯১টি ধর্ষণের অভিযোগ এসেছে। গার্হস্থ হিংসার ঘটনাও কম নয়।

এমনকি প্রবাসেও গার্হস্থ হিংসার শিকার হতে হয় পাকিস্তানের নারীদের। যেমন, শিকাগোতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান এক তরুণীকে খুনের একটি ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। সানিয়া খান (২৯) নামে ওই তরুণী বিবাহ বিচ্ছেদের পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় অসুখী দাম্পত্য জীবন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। কিছু দিনের মধ্যে ১১০০ কিলোমিটার দূরের জর্জিয়া থেকে তাঁর প্রাক্তন স্বামী এসে সানিয়াকে গুলি করে হত্যা করে। নিজেও আত্মঘাতী হয় রাহেল আহমাদ (৩৬) নামে ওই যুবক। সানিয়ার শিকাগোর বাড়ি থেকে গুলি চলার আওয়াজ পেয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। ঘরে ঢুকে সানিয়াকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাহেলকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয় তার।

গত বছর বিয়ে হয়েছিল সানিয়া-রাহেলের। পেশায় চিত্রগ্রাহক সানিয়ার বিবাহিত জীবন সুখের ছিল না। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। সম্প্রতি টিকটকে অসুখী দাম্পত্য, বিচ্ছেদের মানসিক যন্ত্রণা, বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় বিবাহ-বিচ্ছিন্না মেয়েদের উপরে পারিবারিক চাপ ইত্যাদি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তরুণী। বিষয়গুলি নিয়ে চুপ না থেকে আলোচনার কথা বলেন তিনি। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সানিয়ার অনুগামীদের মতে, এরই মূল্য দিতে হয়েছে সানিয়াকে।