আমেরিকার হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিনা সেনাদের আস্ফালন শুরু হয়ে গেল। সূত্রের খবর, তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে চিনের লাল ফৌজ। আকাশে চক্কর কাটছে চিনের ২৭টি যুদ্ধবিমান। তাহলে কি যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করল চিন?
চিনা বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা দফতরের তরফে ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। চিন এর আগে ঘোষণা করেছিল, তাইওয়ানের চারদিকে ৬টি এলাকায় তারা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া চালাবে। তবে সামরিক মহড়া শুরু হওয়ার আগেই তাইওয়ানের আকাশসীমায় ঢুকেছে ঝাঁকে ঝাঁকে চিনা যুদ্ধবিমান। তাইওয়ান প্রণালীকে বিপজ্জনকও ঘোষণা করেছে বেজিং।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তাইওয়ানকে ঘিরে চিনের এই সামরিক মহড়া চরম সংকট তৈরি করতে পারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে কিনা সে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। যে ৬টি এলাকায় চিন মহড়া চালাবে তার তিনটি পড়েছে তাইওয়ানের উপকুল থেকে ১২ মাইলের সমুদ্রসীমার ভেতরে। এর অর্থ হল, তাইওয়ানের আকাশ ও সমুদ্রসীমার নিয়ম লঙ্ঘন করেই চিন সামরিক মহড়া চালাবে। যদি ১২-মাইল জলসীমার ভেতরে চিনের রণতরী বা যুদ্ধবিমান ঢোকে তাহলে তাইওয়ান একে আগ্রাসন হিসেবেই ধরবে। কাজেই তারাও প্রত্যাঘাতের জন্য চেষ্টা করবে।
তাহলে কি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে? আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই হয়ত তাইওয়ান দখলের চেষ্টা নাও করতে পারে চিন। কারণ তাইওয়ানে চিনা গতিবিধির দিকে সতর্ক নজর রেখেছে আমেরিকা। দক্ষিণ-পূর্ব চিনের উপকূল থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরে থাকা তাইওয়ানকে ঘিরে রয়েছে চিন ও আমেরিকার যুদ্ধজাহাজ। ন্যান্সি পেলোসির সফরের সময় চিনের রণতরী সক্রিয়তা দেখিয়েছে। তাইওয়ান অভিযোগ করেছে ২১ টি চিনা যুদ্ধ বিমান তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে। তাইওয়ানের বিভিন্ন বন্দরকে প্রায় ঘিরে ফেলেছে চিন। এর মধ্যে রয়েছে তাইপেই।অন্যদিকে একটি বিমানবাহী রণতরী-সহ চারটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ানের পূর্ব জলসীমায় মোতায়েন করা হয়েছে। এই যুদ্ধজাহাজগুলি হল ইউএসএস রোনাল্ড রেগন, ইউএসএস ত্রিপোলী, ইউএসএস আমেরিকা এবং ইউএসএস এসেক্স। তাই এই সংঘাত কোন দিকে মোড় নেবে তা এখনই বলা কঠিন।