রবিবার তখন ভোরে এক ব্যক্তি এসে ভ্যানে থাকা পুলিশদের জানায়, সে তার স্ত্রীকে খুন করে আসছে! শুনে প্রথমে কিছুটা বিস্মিত হয়ে যান পুলিশকর্মীরা। ভাবেন পাগলের প্রলাপ, কিন্তু বারবার একই কথা বলায় সন্দেহ বাড়ে, খতিয়ে দেখে জানতে পারে সত্যিই বলছে সে। ওই ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় এক মহিলার রক্তাক্ত দেহ !
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার পানোয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সেই গ্রামেরই বাসিন্দা শেখ রহমত। ১৩ বছর আগে মমতাজ খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তাঁদের দুই কন্যাসন্তানও রয়েছে। রবিবার ভোরের ঘটনায় হতভম্ব মমতাজের বাপের বাড়ির লোক ও পাড়া প্রতিবেশীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদিন ভোরে আলিনগর চৌরাস্তার ধারে তখন সবে এসে দাঁড়িয়েছে পুলিশের একটি জিপ। সেই জিপ থেকে নামেন পুলিশের দুই তিনজন কর্মী। হঠাৎই তাঁদের কাছে এসে রহমত জানায় সে তার স্ত্রীকে খুন করেছে। শুনেই থানায় ফোন ঘোরায় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। ওসির নির্দেশেই রহমতের সঙ্গে তার বাড়ি যায় পুলিশ।
বন্ধ ঘরে তখনও পরে এক মহিলার মৃতদেহ। চারদিকে রক্ত। তৎক্ষনাৎ পুলিশ রহমতকে গ্রেফতার করে, থানায় নিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশের জেরায় রহমত জানায় কেন ও কীভাবে তার স্ত্রীকে সে খুন করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘুমন্ত স্ত্রীকে প্রথমে গলায় ওড়না জড়িয়ে চেপে ধরে রহমত। তবে বুঝতে পারে না মৃত্যু হয়েছে কিনা, তাই মাথায় একাধিকবার শাবল দিয়ে আঘাত করে। খুনের কারন জানতে জিজ্ঞাসাবাদে রহমত জানায়, সময়ে রান্না করত না মমতাজ, কাজ থেকে ফিরে তাকেই রান্না করতে হত। কোনও দায়িত্ব পালন করত না।
যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, লটারির টিকিট কেনাকে কেন্দ্র করে প্রায়শই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হত। বাজারে প্রচুর ঋণ ছিল রহমতের। কিন্তু তার পরেও খুনের আসল কারণ এখনও কেউ বুঝতে পারছে না। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।