২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ন


আজব শহর তৈরী করছে সৌদি আরব, যেখানে আকাশে উড়ে বেড়াবে ট্যাক্সি !
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৭-২০২২
আজব শহর তৈরী করছে সৌদি আরব, যেখানে আকাশে উড়ে বেড়াবে ট্যাক্সি ! আজব শহর তৈরী করছে সৌদি আরব, যেখানে আকাশে উড়ে বেড়াবে ট্যাক্সি !


বাড়ির মধ্যেই গোটা শহর! মরুভূমি বরাবর এই শহরের মধ্যে কী নেই। কৃষি জমি, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, খেলার মাঠ থেকে শুরু করে বাজার রেল স্টেশন। শুধু তাই নয়, এই শহরেই চলবে উড়ন্ত ট্যাক্সি, থাকবে রোবট দাসদাসী অর্থাৎ আপনার ফাইফরমাস খাটবে রোবট, নিজের আইনেই চলবে এই শহর !

তবে এমনই এক মরু শহর বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে চাইছে সৌদি আরব । হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন এমনই ইচ্ছা। সেইজন্য পরিকল্পনাও শুরু হয়ে গেছে।

১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি সমান্তরাল অট্টালিকা তৈরি হচ্ছে। যার উচ্চতা ১৬০০ ফুট। কী নাম এই শহরের? ‘এনইওএম’ বা নিওম নামে এই শহরে থাকবে বসবাসের আধুনিকতার ছোঁয়া। সেই আধুনিকতা যেন রূপকথার বই থেকে উঠে আসবে। ‘দ্য লাইন’ নামেও পরিচিত এই শহর। যদি বাস্তবে সত্যিই এমন শহর গড়ে তা হবে যুগান্তকারী ঘটনা।

২০১৭ সালে প্রথম এই শহর তৈরির ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন যুবরাজ সালমান। তারপর থেকে শুরু হয় পরিকল্পনা। যুক্ত হয়েছে একাধিক বিষয়। সেই তালিকাতেই নয়া সংযোজন উড়ন্ত ট্যাক্সি ও রোবট দাস বা পরিচারিকা। কিন্তু এই কথা প্রকাশ হতেই বিশেষজ্ঞরা এই শহরের বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের কথায়, এই কয়েক বছরে একাধিক বার শহরের পরিকল্পনা পরিবর্তন হয়েছে। ফলে কখনও এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে।

লোহিত সাগর থেকে শুরু করে মরুভূমি মধ্যে দিয়ে সরলরৈখিকভাবে বিস্তৃত হবে এই শহর। এই শহরে থাকবে না কোনও দূষণ। দুই অট্টালিকাই থাকবে সরলরৈখিকভাবে। সৌদি আরবের যুবরাজের কথায়, ২০৩০ সালের মধ্যে এই শহর তৈরি হয়ে যাবে।

প্রথমে বলা হয়েছিল এই শহরে থাকবে ১০ লক্ষ মানুষ। তবে পরে সেটি বাড়তে থাকে। সালমানের কথায়, ২০৩০ সালের মধ্যে এই শহরের জনসংখ্যা ১২ লক্ষ হবে, ২০৪৫ সালের মধ্যে সেই সংখ্যা ৯০ লক্ষে পৌঁছে যাবে।

বিশ্বের সেরা স্থপতিদের দিয়ে তৈরি করা হবে এই শহর। এই দুই অট্টালিকার মধ্যেই থাকবে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা। থাকবে সবুজের ছোঁয়া। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই শহরের মধ্যে যাঁরা থাকবেন তাঁরা মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানেই পাবেন সমস্ত সুযোগ সুবিধা। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বাজার, খেলার মাঠ থেকে শুরু করে সবকিছু। বিল্ডিংয়ের নিচ দিয়ে একটি হাই-স্পিড ট্রেন চলবে। এখানকার বাসিন্দাদের জন্য থাকবে কমিউনিটি ক্যান্টিন এবং কো-লিভিং রান্নাঘর। খাবারের জন্য মাসে মাসে দিতে হবে নির্দিষ্ট ফি। যা দিলেই সারা মাসে মিলবে খাবার। সৌদি আরবের কথায়, এটি ‘বিশ্বের প্রথম মাধ্যাকর্ষণহীন শহর’ হতে চলেছে। অর্থাৎ, স্কুল-কলেজ, ঘরবাড়ি, পার্ক ইত্যাদি তৈরি হবে স্তরে স্তরে।

এই শহরে থাকবে নিজের আইন। শহরবাসীকে সেই আইন মেনেই চলতে হবে। সৌদি আরবের উচ্চ আধিকারিকদের কথায়, সেই আইন প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে। বাস্তবায়িত কি হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে যতই অবিশ্বাস থাকুক না কেন কর্মকর্তাদের কথায়, ইতিমধ্যেই নিওমে একটি বিমানবন্দর চালু হয়ে গেছে। শীঘ্রই এই বিমানবন্দর থেকে দুবাই পর্যন্ত বিমান চলাচল করবে! আরও দাবি, এই প্রকল্পের ফলে বাড়বে কর্মসংস্থান।

সৌদি আরবের যুবরাজের কথায়, ২০৩০ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের যে অংশের কাজ হবে তার জন্য খরচ হবে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ২৫ লক্ষ কোটি টাকা। সরকারি ভর্তুকি ছাড়াও বেসরকারি খাত থেকে এই টাকা আসবে বলে দাবি করা হয়েছে। বলাই চলে, শহর বলতে আমরা যা বুঝি তার ধারণাই পাল্টে দিতে চাইছে সৌদি আরব।