ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অব্যাহত। ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। প্রতিনিয়ত দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে হামলা চলছে। ধ্বংস হচ্ছে বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এর মধ্যেই পাওয়া গেল ভিন্ন এক খবর। যুদ্ধ চলার মধ্যেই ইউক্রেনজুড়ে বেড়েছে বিয়ের সংখ্যা। এর মধ্যে রাজধানীতেই বিয়ে বেড়েছে আট গুণ বেশি। খবর এনডিটিভির।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, গত পাঁচ মাসে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির রাজধানীতে ৯ হাজার ১২০টি বিয়ের নিবন্ধন হয়েছে। ২০২১ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল এক হাজার একশ ১০টি। সে হিসেবে বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে আট গুণ।
সেনা পোশাকে যুদ্ধে যাওয়ার আগমুহূর্তে ২২ বছর বয়সী আনাস্তাসিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছিলেন ২৫ বছর বয়সী ভিতালি চার্নিখ। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় বিয়ে করা একটি সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত। কারণ কেউ জানে না পরবর্তীতে কী হতে যাচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।
একদিন ভোরে বিষ্ফোরণ হওয়ার পর তেতিয়ানা-তারাস দম্পত্তির বিয়ে পিছাতে হয়েছিল ছয় ঘন্টা। সে দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তেতিয়ানা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমি ভেবেছিলাম আমাদের বিয়ে বাতিল করা উচিত, কিন্তু আমার বাগদত্তা আমাকে বলেছিল আমাদের এগিয়ে যাওয়া উচিত.... যুদ্ধের আমাদের পরিকল্পনা নষ্ট করার কোনো অধিকার নেই।
এই দম্পত্তি গেল জুন মাসে এই দম্পতি, যারা জুন মাসে কিয়েভের ২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ক্রেমেনচুকের শিল্প কেন্দ্রে বিয়ে করেছিলেন। তেতিয়ানা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মে মাসে আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে যুদ্ধটি অনেক দিন স্থায়ী হতে পারে। আমরা যুদ্ধ পরবর্তী সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ, এই যুদ্ধ আমাদের দেখিয়েছে, পরবর্তীতে আর এমন সুযোগ নাও আসতে পারে।
প্রতিনিয়ত ইউক্রেনের রাজধানীসহ সারা দেশে প্রচুর বিয়ে হচ্ছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি তাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে। অনেকেই ভাবছে যুদ্ধের পর বিয়ের সুযোগ আর আসবে না কেননা ফেব্রুয়ারীতে শুরু হওয়া যুদ্ধ কবে শেষ হবে তা কেও জানে না। তাই এমন পরিস্থিতিতেই বিয়ের কথা ভাবছেন অনেকে।
মূলত ইউক্রেনে বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি জটিলতায় পড়তে হচ্ছে না। প্রথমে নিবন্ধন না করে যেকেউ তাৎক্ষণিক বিয়ে করতে পারে। আর এ সুযোগটিই নিচ্ছেন বিয়ে করতে আগ্রহীরা।
এক পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন চূড়ায় গিয়ে ঠেকেছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রে ১২ মাসে ১৮ লাখ বিয়ে হয়। এই সংখ্যা এক দশক আগের চেয়ে ৮৩ শতাংশ বেশি।