লক্ষ্মীপুরে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর মেঘা থেকে নিখোঁজ ভাই-বোনের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ৩টার দিকে সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর মেঘার নব্যার চরে ক্ষেতের পাশে তাদের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত শিশুরা হলো সদর উপজেলার চররমনি মোহন ইউনিয়নের চর মেঘা এলাকার নব্যার চরের কৃষক সুজন ঢালির ছেলে তাজমুর (৬) ও তার বোন সামিয়া (১০)।
রোববার (১৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. মমিনুল হক মোবাইল ফোনে ওই দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত, মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তবুও পুলিশ নিবিড়ভাবে বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, সদর উপজেলার চর রমনি মোহন ইউনিয়নের চর মেঘা এলাকার নব্যার চরে পরিবার নিয়ে বাস করেন কৃষক সুজন ঢালি। শনিবার বিকেলে দুই ছেলে আরিফ, তাজমুর ও মেয়ে সামিয়াকে নিয়ে নৌকায় বাড়ির পাশের একটি দোকানে বাজার করতে যান তিনি।
এরপর বড় সন্তান আরিপকে তার সঙ্গে রেখে দিয়ে ছোট ছেলে মেয়েকে নৌকায় উঠিয়ে বাড়ি যেতে বলেন তিনি। এ সময় নদীতে জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করে। এতে ডুবে যায় আশপাশের বিস্তীর্ণ চর এলাকা। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামলেও সামিয়া ও তাজমুর বাড়ি ফেরেনি। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বাড়ির পাশের একটি ক্ষেতের পাশ থেকে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।
মরদের শরীরের নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেরুতে দেখা গেছে। তাদের এ রক্তক্ষরণের দৃশ্য দেখে ঘটনাটি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবা সুজন ঢালি অভিযোগ করে জানান, প্রতিবেশী প্রভাবশালী আক্কাছ ব্যাপারী ও বিলকিছদের সঙ্গে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধে মামলা চলমান রয়েছে। এর জের ধরে তাদের নানা সময় হুমকি ধামকি দেন তারা। তাদের ধারণা, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ বিলকিছরা তার সন্তানদের হত্যা করে মরদেহ পানিতে ভাসিয়ে দিতে পারেন। তাই তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ জানান, ভাই ও বোনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনাতদন্ত করে এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রাজশাহীর সময়/এএইচ