২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০১:৩৭:১৫ পূর্বাহ্ন


হজযাত্রায় মারা যাওয়া ব্যক্তির ফজিলত ও মর্যাদা
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৭-২০২২
হজযাত্রায় মারা যাওয়া ব্যক্তির ফজিলত ও মর্যাদা ফাইল ফটো


হিজরি বছরের শেষ মাস জিলহজের ৮ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত দিনগুলোতে অনুষ্ঠিত হয় হজ। এ উপলক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিশু, কিশোর, যবুক, বৃদ্ধ লাখো মুসলিম নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে। পূণ্যের এ মহাসম্মিলনে অংশগ্রহণ করতে এসে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। কেউ হজের সফরে মৃত্যুবরণ করেন আবার কেউ হজের পরে মৃত্যুবরণ করেন। হজযাত্রীদের এ মৃত্যু নিয়ে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন চমৎকার সুসংবাদ।

কেননা হজ ও ওমরার পালনে পবিত্র নগরী মক্কায় আগমন আল্লাহ তাআলার নির্দেশ। ধর্মপ্রাণ মুসলমান যখন পবিত্র নগরী মক্কা কিংবা মদিনায় অবস্থান করেন, তখন তারা হয়ে  যান আল্লাহর মেহমান। আল্লাহর মেহমান থাকা অবস্থায় কারো মৃত্যু হলে নিশ্চিত সে মৃত্যু কল্যাণের।

ইহরাম অবস্থায় পবিত্র নগরী মক্কা কিংবা মদিনায় মৃত্যুবরণ সম্পর্কে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুসংবাদ দিয়ে ঘোষণা করেন-

১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। এরপর সে মারা গেছে, তার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত হজের নেকি লেখা হতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি ওমরার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে; এরপর সে মারা গেছে, তার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত ওমরার নেকিও লেখা হতে থাকবে।’ (তারগিব ওয়াত তারহিব)

২. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমরা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। সে সময় ইহরাম অবস্থায় এক ব্যক্তি হঠাৎ উটের পিঠ থেকে পড়ে ঘাড় ভেঙে মারা যায়। ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা সিদ্ধ পানিতে কুল গাছের পাতা দিয়ে তাকে গোসল দাও এবং তাঁর ইহরামের কাপড় দু’টি দিয়ে কাফন দাও। তবে তার শরীরে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মাথা ঢাকবে না। কেননা কেয়ামতের দিন তাকে (ইহরামকারী মৃতব্যক্তিকে) তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় ওঠানো হবে। (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)

হজের সফরে মৃত ব্যক্তির জন্য দুঃখ নয়; বরং এ মহা খোশখবরি। কারণ হজের সফরের মৃত ব্যক্তিকে ইহরামের পোশাকেই দাফন করা হবে। আর কেয়ামতের দিন ইহরামের পোশাকেই তালবিয়া পাঠ করতে করতে সে হাজির হবে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছরই হজের সময় সৌদি আরবের মক্কা বা মদিনায় অবস্থানকালে অনেক হজযাত্রী মারা যায়। নিয়ম অনুযায়ী হজ করতে যাওয়া কোনো হজযাত্রী মারা গেলে তার লাশ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় না। আর এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্রে হজের প্রস্ততিকালেই প্রত্যেক হাজিকে সম্মতি দিতে হয়।

হজের সফরে মক্কায় যারা মারা যায় তাদেরকে কাবা শরিফের সন্নিকটে জান্নাতুল মাওলাতে দাফন করা হয়। আর যারা মদিনায় মারা যায় তাদেরকে মসজিদে নববি সংলগ্ন বাকিউল গারকাদ বা জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়।

যে কবরস্থানে প্রিয়নবির সন্তান, স্ত্রীসহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরামের দাফন রয়েছে। হজ পালনকারীদের কেউ মারা গেলে তাদের দাফন এসব গোরস্থানে হওয়াও সৌভাগ্যের। আর হাদিসের খোশ-খবর তো রয়েছেই।

মুসলিম উম্মাহর যেসব হজযাত্রী হজের সফরে মারা যায়; আল্লাহ তাআলা সেসব হজ পালনকারীকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময়/এএইচ