আর্থিক সঙ্কট চরমে উঠেছে । ঘরে ঘরে জল নেই, খাবার নেই। বিদ্যুৎ সংযোগও ছিন্ন। বেশিটা সময়েই অন্ধকারে কাটাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আর্থিক বিপর্যয়ের জন্য সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন লঙ্কার বাসিন্দারা। ক্ষোভের পারদ চড়েছে। ফের রাস্তায় নেমে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে আসন্ন বিপদের ভয়ে ফের শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকার। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে দেশের শাসনভার সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ভয়ানক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে শ্রীলঙ্কা। দেশে জ্বালানির হাহাকার । প্রায় বন্ধ পরিবহণ। খরচ বাঁচাতে ১০-১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে দেশ জুড়ে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার মানুষ তাঁর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। এর আগে এপ্রিল মাসেও এমন ভয়ানক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। উন্মত্ত জনতাকে থামাতে লাঠি চালাতে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছিল পুলিশকে। এর পরেই দেশের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আরও বছর দুয়েক আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা করতে হতে পারে শ্রীলঙ্কাকে।
গত কয়েক দশক ধরে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। কোভিড অতিমহামারীর সময় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশের পর্যটন ক্ষেত্র। একসময় পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য চিনের থেকেও বিপুল অর্থ ঋণ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তার সুদ দিতে গিয়ে প্রায় দেউলিয়া হয়ে গেছে দেশ। কয়েক বছর আগেই অতিবৃষ্টিতে ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। এর ওপরে সরকার রাসায়নিক সারের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। ফলে কয়েক বছর ধরে ফসলের উৎপাদন আশানুরূপ হয়নি। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির এক বড় অংশ ছিল পর্যটনের ওপরে নির্ভরশীল। ২০১৯ সালে জঙ্গিদের বিস্ফোরণের পরে দেশে পর্যটক আসা কমে যায়। এরপরে আসে অতিমহামারী। মুখ থুবড়ে পড়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি।
অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, শ্রীলঙ্কা তার প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্য আমদানি করে। আমদানির ওপরে অত্যধিক নির্ভরশীলতা দেশের বিপদ ডেকে নিয়ে এসেছে।