সুরের মূর্ছনায় নতুন বছরকে বরণ করে নিল ছায়ানট। রমনা বটমূলে প্রভাতী আয়োজনে ছিল হাজারো মানুষের সম্মিলন। দুই বছর বিরতির পর এ আয়োজনে অংশ নিয়ে সত্য ও সুন্দরের জয়গান গাইলেন সাধারণ মানুষ।
মায়াময় এ প্রভাত, সংগীতের মূর্ছনায়। যেন এক ঐন্দ্রজালিক আবহ। প্রকৃতি আর মানুষ যেন এক-একাকার। নিবিড় হয়ে থাকা এ মুহূর্তে রাগ রামকেলী ও রাগ আভীর ভৈরবে মোহবিষ্ট হাজার প্রাণ। যেন এক পরশ পাথরের ছোঁয়া।
বাংলা গানের কত কত ধারা মিলেছে একই মোহনায়। ক্রমান্বয়ে বেজে উঠল সংগীতের মোহনীয় সুরের বিচিত্র আয়োজন।
মহোৎসবের মহাস্বর বেজে উঠল। কত বাসনা- প্রাণ পণে চাওয়া। সুর, কথন, আবৃত্তিতে ম্লাণ-বিষণ্ণ জীবন নিয়ে উদ্ধত চোখে চাওয়া অপ্রতিহত উৎসাহে-নতুন প্রাণ দাও, প্রাণসখা।
এক তরুণ বলেন, অনুষ্ঠানটা হচ্ছে বাঙালির প্রাণ। আজকে মনে হচ্ছে বাঙালি প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
এক বৃদ্ধ বলেন, আগে আমরা ছেলে-মেয়েদের হাত ধরে নিয়ে আসতামণ এখন ছেলে-মেয়েরা আমাদের হাত ধরে নিয়ে আসে।
এক তরুণী বলেন, এ অনুষ্ঠান সংস্কৃতিকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।
বাঙালি পেরিয়ে এল অন্তবিহীন পথ। তবুও তো ১৮২৯ এ মঙ্গলবোধের আয়তন ক্রমশ বাড়ুক। ভবিষ্যতে পাক অর্থময় মানচিত্র।
অনুষ্ঠানে এক দর্শনার্থী বলেন, ধর্ম যার যার সেটা তো থাকবেই কিন্তু ভাষা এবং উৎসব সবার। এবারের প্রধান প্রত্যয় হবে আমরা সবাই মিলে আবার প্রাণে মিলিত হব। আমরা অসম্প্রাদায়িক চেতনায় জাগ্রত হব এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্যের স্বপ্ন দেখব।
সাংস্কৃতিক প্রয়াসকে এগিয়ে নেওয়া সংগঠন ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন গানে গানে তার আহ্বান জানালেন। নব আনন্দে জাগো।
শেষটা জাতীয় সংগীতে। এবার সবার দাঁড়িয়ে যাবার দায়।
বছরের পহেলা দিন ভোরবেলা একটু শিউরে উঠে তারপরই নির্জীব হয়ে পড়বে কি বাঙালির দশদিগন্ত? নব দিনে এই প্রশ্নের মীমাংসা হোক।
রাজশাহীর সময় / এম আর