০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:০৫:৩৭ অপরাহ্ন


রাণীনগর নারায়নপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রোগীর চিকিৎসাসেবা-ওষুধ নিতে হয় পানিতে নেমে
নওগাঁ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-১০-২০২৪
রাণীনগর নারায়নপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রোগীর চিকিৎসাসেবা-ওষুধ নিতে হয় পানিতে নেমে


গ্রামাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য চিকিৎসাসেবা সহজ করতে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের নারায়নপাড়ায় গড়ে তোলা হয় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এক সময় উপজেলার পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামের মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল ছিল এটি। তবে এখন ভবনের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে কেন্দ্রটির। দেয়ালে ফাটল ধরায় এবং অবকাঠামো নষ্ট হওয়ায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এরপরও ভবন সংস্কার না করেই চলছে চিকিৎসাসেবা। 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নারায়নপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসাসেবা। ধ্বসে পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। নেই কোনও বিদ্যুৎ সংযোগও। বর্ষা মৌসুমে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ থাকায় মৌসুমজুড়ে এর চারপাশে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে জমে থাকা পানিতে নেমেই চিকিৎসাসেবা আর ওষুধ নিচ্ছেন রোগীরা।

চিকিৎসা নিতে আসা তহমিনা বেওয়া, এলাহী, সখিন উদ্দীনসহ কয়েকজন জানান, এলাকার মানুষের ভরসা এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু অবকাঠামো সংস্কার কিংবা মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোনও নজর নেই। গ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে তিন-চার বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের।

এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। তবে কোনও প্রতিকার মেলেনি। অনেক চেষ্টা করেও বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৮০ জনকে সেবা দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসা কর্মকর্তা ও কর্মীরা। তারা বলছেন, প্রায় তিন-চার বছর ধরে বর্ষা শুরু হলে কেন্দ্রের চারপাশে পানি জমে থাকে। ফলে হাটু পানি মাড়িয়ে রোগী এসে চিকিৎসা নিয়ে যান। অনেক সময় পানিতে দাঁড়িয়ে থেকেই ওষুধ নিতে হয় তাদের।

উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট আসাদুল ইসলামের ভাষ্য, মাথার ওপর ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। যে কোনও সময় পুরো ছাদই ধ্বসে পরতে পারে। কিন্তু চিকিৎসাসেবা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে তাদের। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় প্রচন্ড গরমের মধ্যে সেবা দিতে কষ্ট হয়। এলাকার লোকজনের সঙ্গে ভালো সর্ম্পক থাকায় মাঝেমধ্যে হাত পাখা দিয়ে যান সেবাগ্রহীতারা।

এলাকার মানুষ বলছেন, হাঁটু পানি মাড়িয়ে চিকিৎসাসেবা নেওয়া তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভবনটি অত্যন্ত ঝঁকিপূর্ণ হওয়াযে কোনও সময় ধ্বসে পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. কে এইচ এম ইফতেখারুল আলম বলেন, ভবনটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কবে থেকে কাজ শুরু হবে, বলা যাচ্ছে না। পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয়ভাবে নালা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাইমেনা শারমীন বলেন, তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন, অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা রয়েছে। নারায়নপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরেজমিন গিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।