শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের মধ্যে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।সাড়ে ১৫ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তুমুল গণআন্দোলনের পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। এসময় একে অপরের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন। শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয় লাভের পর প্রবাসীরা যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি করেন। বিভিন্ন শহরের রাস্তায় রাস্তায় নানা বয়সের নারী পুরুষ পতাকা নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করছেন। স্বৈরাচারি বিদায়ে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী উল্লাস করেন। নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে যেন বাধ ভাঙা শ্রোত।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের খবরে গত সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে নেমে আসে প্রবাসীদের বাধ ভাঙা শ্রোত। এসময় তারা ‘এই মুহূর্তে খবর এল, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেল’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, শেখ হাসিনা গেলি কই’- এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শান্তিপূর্ণ ভাবে উল্লাসসহ মিষ্টি বিতরণ করেন। এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও তার অংগসংগঠনের উদ্যোগে মিষ্টি বিতরণসহ বিজয় উদযাপনে আলোচনা সভা করেন।
বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার থেকে দেশ আবার স্বাধীন হল। খুবই খুশি লাগছে, এটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ছাত্র সমাজের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। যেই শাসকই শিক্ষার্থীদের রক্ত নিয়ে হলিখেলা করেছে, তারা ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আজকে তা আবারও প্রমাণিত হল। আজকে একটি ঐতিহাসিক বিজয় অর্জিত হল। কিন্তু এই বিজয়ে অনেক বেশি রক্ত দিতে হয়েছে। এই বিজয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তারা শহীদের মর্যাদা পাক।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জনবহুল ও বাংলাদেশি অধুষ্যিত নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্জিনিয়া, ম্যাসাচুসেটস, কানেকটিকাট, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, ওহাইও, ইলিনয়স, কলারাডো, ডেলাওয়ার, জর্জিয়া, কানসাস, ম্যারিল্যান্ড, মিশিগান, সাউথ ক্যারোলিনা, ওয়াশিংটন ও কেন্টাকি’র প্রবাসী বাংলাদেশিরা পৃথক পৃথক সমাবেশ ও বিজয় উল্লাস করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্টেট বিএনপির সভাপতি অলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সাধারন সম্পাদক সাঈদুর রহমান সাঈদ।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও তার অংগসংগঠনের উদ্যোগে মিষ্টি বিতরণসহ বিজয় উদযাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যেও একই ধরনের আনন্দ-উল্লাস করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। গত ১৫ বছরের অপশাসন আর দু:শাসনের জন্য শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি সকল হত্যা-গুম-খুনের জন্য শেখ হাসিনাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা ও কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, কেন্দ্রীয় নেতা জিল্লুর রহমান, গোলাম ফারুক শাহীন এবং রীটা রহমান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা ইঞ্জিনিয়ার হারুন, এম এ বাতিন, আবু সাঈদ, জাকির এইচ চৌধুরী, ভিপি জসিম, আনিসুর রহমান, পিন্টু, রিনা, বারেক, আলমগীর মৃধা, মনির হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন, আমিনুল ইসলাম স্বপন, জাফর রহমান প্রমুখ বিজয় উৎসবের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।