২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৭:৫২:৩৯ পূর্বাহ্ন


তেহরানে দুমাস ধরেই টার্গেট করা হচ্ছিল হামাস প্রধানকে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৮-২০২৪
তেহরানে দুমাস ধরেই টার্গেট করা হচ্ছিল হামাস প্রধানকে তেহরানে দুমাস ধরেই টার্গেট করা হচ্ছিল হামাস প্রধানকে


হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ে। সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে তার। তবে এই হানিয়েকে নিকেশ করতে গত দুমাস ধরেই নানা চেষ্টা চলেছে। এমনকী ইরানে যে গেস্ট হাউসে তার থাকার কথা ছিল সেখানে বোম রাখারও পরিকল্পনা ছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে বিভিন্ন সূত্র মারফৎ এমনটাই বলা হয়েছে। তেহেরানের একটি অভিজাত এলাকায় রয়েছে এই গেস্ট হাউস। সেই গেস্ট হাউসটিকে ঘিরে থাকত রেভলিউশনারি গার্ডস কর্পসের লোকজন। একটা বড় কম্পাউন্ডের মধ্য়ে রয়েছে এই গেস্ট হাউস। এই জায়গাটিতে রেভলিউশনারি গার্ডস কর্পস তাদের বিভিন্ন গোপন মিটিং করার জন্য ব্যবহার করত। 

তবে দুমাসের অপেক্ষার অবসান। অবশেষে মৃত্যু হয়েছে হামাস প্রধানের। 

তেহেরানে এসেছিলেন হানিয়ে। ইরানের প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তিনি এসেছিলেন। মঙ্গলবার কিছুটা নিশ্চিত করা হয় যে হামাস প্রধান গেস্ট হাউসের ঘরের মধ্য়ে রয়েছেন। এরপর চক্রান্তকারীরা তার কাছাকাছি বোমা রাখে। রিমোটের মাধ্যমে সেই বোমা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই বিস্ফোরণে গোটা বিল্ডিং কেঁপে ওঠে। দেওয়ালের একাংশ ভেঙে যায়। জানালা ভেঙে যায়। হানিয়ে আর তার এক বডিগার্ডকে খুন করা হয়। প্যালেস্টাইনের হামাস গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে এই হামলার পেছনে রয়েছে ইজরায়েল। 

এদিকে হামাস নেতার মৃত্যুর জেরে কার্যত শান্তিপ্রক্রিয়া একেবারে ভেঙে পড়ে। নতুন করে হিংসা ছড়াচ্ছে গোটা এলাকায়। তবে ইজরায়েল তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে চায়নি। 

এদিকে হানিয়ার তিন পুত্র- হাজেম, আমির আর মহম্মদ তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। সেই সময় ইজরায়েল বিমান হানা চালায়। একটি গাড়িতে চেপে তারা কয়েকজন যাচ্ছিলেন। সেই গাড়ি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামাস জানিয়েছে, হানিয়ার চার নাতি, তার মধ্য়ে তিনজন মেয়ে ও একটি ছেলেকে হারিয়েছেন।

এদিকে তার ছেলেরা এই হামাস গ্রুপের যোদ্ধা ছিলেন কি না সেই বিষয়টি এড়িয়ে যান হানিয়ে। তিনি জানিয়েছিলেন প্যালেস্টাইনের মানুষের স্বার্থরক্ষাটা তাদের কাছে অনেক উপরে।

২০১৭ সালে গাজা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন হানিয়া। হানিয়ের পরে ইয়াইয়া সিনওয়ার ক্ষমতায় আসেন। তিনি এর আগে দুই দশক ইজরায়েলের জেলে ছিলেন। পরে বন্দি প্রত্যর্পণের মাধ্যমে তিনি প্য়ালেস্টাইনে ফিরে এসেছিলেন। এদিকে অভিজ্ঞ মহলের মতে হানিয়া হামাস হামলার নেপথ্যে ছিলেন। তার সঙ্গে হামাসের মিলিটারি শাখার যোগাযোগ ছিল। তিনি ছিলেন হামাসের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মদতদাতা।

ইরানের নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনেইয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন হানিয়া। যাতে ইরান এই যুদ্ধের মধ্যে না থাকে। তবে রয়টার্স এনিয়ে হামাসের জবাব চেয়েছিল। কিন্তু হামাস এনিয়ে জবাব দেয়নি।

প্রথম জীবনে শরনার্থী হিসাবে দিন কাটাতেন হানিয়া ও তার পরিবার। হামাসের নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের ভক্ত ছিলেন তিনি। পরে ইয়াসিনের সঙ্গী হয়ে ওঠেন তিনি। একেবারে বিশ্বস্ত সঙ্গী। ২০০৪ সালে ইয়াসিনকে হত্যা করে ইজরায়েল। এবার হত্যা করা হল হানিয়েকে।