পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ঢলের পানিতে শাল্লা ও ধর্মপাশা উপজেলার পাঁচ বাঁধ উপচে হাওরে পানি প্রবেশ করেছে। এতে শতাধিক হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
বুধবার সকালে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব ও ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে চন্দ্রসোনার থাল হাওরের ৭৫ নম্বর প্রকল্পের ডুবাইল বরুণ কাইচ্ছা বাঁধ ভেঙে বোরো ফসল তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই বাঁধ ভেঙে যায়।
এদিকে মঙ্গলবার গুরমার হাওরের ১১৫ নম্বর প্রকল্পের অধীনে স্লুইস গেট দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এছাড়াও সোনামড়ল হাওরের ৫৪ নম্বর প্রকল্পের বাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে জয়শ্রী ইউনিয়নের কয়রানী হাওরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে গত সোমবার বিকেলে ধর্মপাশায় কংস নদীর পানি শয়তানখালী খাল হয়ে রুইবিল, কাইল্যানী, বুন্না, নয়াবিল ও ডুলিজার হাওরের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। স্থানীয়রা ওই খালের নোয়াবন্দ-আবুয়ারচর গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করে বাঁধ দিয়ে তা প্রতিরোধ করে। অপরদিকে রাতেই সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রাম সংলগ্ন অরক্ষিত স্লুইস গেট দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করতে থাকলে স্থানীয়রা তা প্রতিরোধ করে।
স্থানীয়রা দাবি, প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হেক্টর জমি অকাল বন্যায় ভেসে গেছে। তবে প্রশাসনের দাবি ৪০ হেক্টর জমি।
ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের কৃষক রাজন রায় বলেন, ৮ কেয়ার জমি করেছি। সবকিছু তলিয়ে গেছে। বাঁচার কোনো পথ নেই। ছেলে মেয়ে কীভাবে নিয়ে চলব, সেই দিকটি চিন্তা করছি। পানি আসার আগে কয়েকবার প্রশাসনের কাছে গেছি একটা ব্যবস্থা করার জন্য। পরে নিজেরাই মাথায় করে মাটি ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছি শেষ বারের জন্য আমরা চেষ্টা করে গেলাম। রক্ষা করতে পারলাম না আমাদের ফসলি জমি।
ধর্মপাশার ইউএনও মুনতাসির হাসান বলেন, ওভার ফ্লো হয়ে বাধ উপচে পানি প্রবেশ করেছে। শাল্লা উপজেলার কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে। এই দুই হাওরে ৪০ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করে।
তিনি আরও বলেন, কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। তবে বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাবহির্ভূত। আমরা ফসলি জমি রক্ষার চেষ্টা করেছি। কিন্তু উজানের পাহাড়ি ঢল ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আর বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
রাজশাহীর সময় / এম আর