প্রযুক্তিতে বরাবরই বাকি বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে চিন। আর এই প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন নতুন সব অস্ত্র উদ্ভাবনও দেশটির জন্য নতুন নয়। এবার 'হাই-পাওয়ার মাইক্রোওয়েভ' বা এইচপিএম নামে নতুন এক অস্ত্র উদ্ভাবন করেছে বেইজিং। বলা হচ্ছে, এই অস্ত্রের মাধ্যমে যে কোনও ড্রোন অকেজো করার পাশাপাশি বিকল করে দেওয়া যাবে সামরিক আকাশযান এবং স্যাটেলাইটও।
সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হাই-পাওয়ার মাইক্রোওয়েভ স্টার্লিং ইঞ্জিনের মাধ্যমে কাজ করে। এতে এই ধরনের মোট চারটি ইঞ্জিন রয়েছে। এসব ইঞ্জিনের মাধ্যমে থার্মাল এনার্জিকে মেকানিক্যাল এনার্জিতে রূপান্তরিত করা যাবে। এর মাধ্যমে তৈরি করা হবে বিশেষ ওয়েভ।
আর সেই ওয়েভ বা তরঙ্গের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা যাবে শক্তিশালী ড্রোন, আকাশযান ও স্যাটেলাইট। এই প্রথম এই ধরনের কৌশল ব্যবহার করে অস্ত্র বানানো হয়েছে বলে ঘোষণা করল কোনও দেশ।
এই প্রযুক্তিতে অতিপরিবাহী কয়েলের মাধ্যমে চার টেসলার ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করা সম্ভব। আর এই শক্তি অন্য কোনও শক্তিতে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। এভাবে টানা চার ঘণ্টা একনাগাড়ে কাজ করতে পারে এই ব্যবস্থা। এতে খরচও কম।
তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চিনের দ্বন্দ্ব বহুদিনের। এছাড়া আরও কিছু ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বও রয়েছে। এ অবস্থায় চিনে বিশেষ ধরনের অস্ত্র রফতানি নিষিদ্ধ করেছে ওয়াশিংটন। এই কারণে বিকল্প ধরনের অস্ত্র বানাচ্ছে শি'র দেশ।
বিশ্লেষকদের মতে, লেসার ও এইচপিএম হচ্ছে ভবিষ্যতের শক্তিশালী অস্ত্র। আর ভবিষ্যতের লড়াইটা হবে অ্যান্টি-ড্রোন ও অ্যান্টি-স্যাটেলাইট কেন্দ্রীক। এ কারণে গত বছরই এ ধরনের অস্ত্র বানানো শুরু করে চিন। অস্ত্রের আকার ও ওজন কম থাকা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যা এই ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রে সহজ ব্যাপার।
তাইওয়ানে হামলা করার চিন্তাভাবনা থেকেই চিন এই লেসার ও এইচপিএম অস্ত্র বানাতে শুরু করেছে বলে ধারণা অনেকের। এছাড়া বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই অস্ত্রের মাধ্যমে আমেরিকাকে কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।