ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পাটখেতে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার (২৮ জুন) ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে পাটখেতে ফেলে যাওয়া হয়।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এ তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনা ঘটিয়েছে একই মহল্লার বাসিন্দা ওই কিশোরীর চাচাতো ভাই। গত শনিবার ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৮ জুন বিকেল ৫টার দিকে ওই কিশোরী বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যায়। ওই সময় তার চাচাতো ভাই (১৬) পুকুর পাড়ে গিয়ে কিশোরীকে ফুসলিয়ে পুকুরের পাশে থাকা পাটখেতে নিয়ে যায়। পরে সেখানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ওই কিশোর ধর্ষণের কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে।
মোর্শেদ আলম জানান, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ওই কিশোরী তার চাচাতো ভাইকে জানায়, তাকে ধর্ষণের কথা সে বাড়িতে বাবা-মাকে বলে দেবে। ওই কিশোর বারবার তাকে এ কথা বলতে নিষেধ করে। কিন্তু কথা না শোনায় কিশোরীর পড়নের ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পুলিশ সুপার জানান, এমন একটি পাশবিক ঘটনা ঘটিয়ে বাড়িতে এসে ওই কিশোর এ ঘটনা তার বাবা টুকু মাতুব্বরকে (৫০) জানায়। টুকু মাতুব্বর নিজের ছেলেকে তখন গালমন্দ করেন। এরপর ছেলেকে বাচাতে নাটক সাজান তিনি। ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে ধান খেত দেখতে যাওয়ার কথা বলে টুকু মাতুব্বর বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। এরপর সেখান থেকে দৌঁড়ে ওই কিশোরীর বাড়িতে এসে তার মাকে জানান, তোমার মেয়ের লাশ পাটখেতের মধ্যে পড়ে আছে। এরপর ওই কিশোরীর স্বজনরা গিয়ে এ অবস্থা দেখে পুলিশকে খবর দেন।
তিনি জানান, এ ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে ২৯ জুন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে ওই দিনই অভিযুক্ত কিশোরকে তার বাড়ি থেকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খালিদ মাহমুদ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ওই কিশোর ঘটনার দায় স্বীকার করে ফরিদপুরের ২নং আমলী আদালতের বিচারক মারুফ হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এরপর তাকে যশোরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।