১৬ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০১:২৬:৩৫ পূর্বাহ্ন


দ্বিতীয় দফায় আবারও বন্যার মুখোমুখি সিলেট ও সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৭-২০২৪
দ্বিতীয় দফায় আবারও বন্যার মুখোমুখি সিলেট ও সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা ছবি: সংগৃহীত


প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দ্বিতীয় দফায় আবারও বন্যার মুখোমুখি সিলেট ও সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা। গেল ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি ও চলমান লঘুচাপে সিলেট-সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। তবে ফেরি ও নৌকায় চলাচল করছেন বাসিন্দারা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী খুশী মোহন সরকার জানান, আগামী তিনদিনে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। এতে নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সমতলে কোথাও কোথাও নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চলে ঢুকতে পারে।

এদিকে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি একদিনে বেড়ে সোমবার (১ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আগের দিন রোববার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এর মধ্যে সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। ঢলের পানি আসাম থেকে বরাক নদী হয়ে সুরমার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার সকাল ৯টায় কানাইঘাটে ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল সুরমা। সিলেটে একদিন আগেও সুরমাসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে ছিল। এখন সবকটি নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।

অন্যদিকে কুশিয়ারাও দীর্ঘদিন থেকে বিপৎসীমার ওপরে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি টানা ২৯ দিন ধরে বিপৎসীমার ওপরে। তবে বৃষ্টি ও ঢল বৃদ্ধি পেলে সেখানে পানি আরো বাড়বে বলেও জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির কারণে উজানের পানিতে সীমান্তের নিচু সড়ক প্লাবিত হয়েছে। রোববার সকাল থেকেই পাহাড়ি ঢলের পানি যাদুকাটা নদী হয়ে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুরের পাশের গ্রামীণ সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এর কয়েক কিলোমিটার পরই শক্তিয়ারখলা সড়কের একশ মিটারও প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া দুর্গাপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারাবাজারেও পানি উঠেছে। বাসিন্দারা নৌকায় চলাচল করছে। 

এদিকে সিলেটের সুরমা নদীর পানি কমলেও সীমান্তবর্তী এলাকা গোয়াইনঘাটের জাফলং, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলোর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে। জৈন্তাপুরে সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে রোববার সন্ধ্যায় ১০ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও আজ আরো বেড়েছে।

পাউবো কর্মকর্তারা বলছেন, সিলেটের সীমান্ত এলাকায় প্রবাহিত নদ-নদীগুলোর পানি বাড়া বা কমার বিষয়টি ভারতে বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। সিলেটে কম বৃষ্টি হলেও ভারতের বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢল নিম্নাঞ্চলে প্রবাহিত হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৯০৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় ৬৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ২১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে লোক উঠেছেন। তবে এর আগে পানি কমায় সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজন বাড়ি ফিরে যান।