রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলের গেট ও প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ডাইনিং ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কারের জন্য সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেয় প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। আজ সকালে এক জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সেই বিষয় তুলে ধরেছেন তাঁরা। তবে জড়িতদের সাথে কথা বলে পরবর্তীকালে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ ঘটনায় হল প্রশাসন থেকে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অনীক কৃষ্ণ কর্মকার। সদস্য হিসেবে আছেন ড. আব্দুল কাদের ও ড. মেসবাহুস সালেহীন। আরেকজনের নাম জানা সম্ভব হয়নি। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল বেলা দেড়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত নবাব আবদুল লতিফ হলের গেটে তালা লাগিয়ে ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ। হল প্রাধ্যক্ষের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতাদের ২০টি জার্সি না দেওয়ায় তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আন্দোলন করে হলে ভাঙচুর চালিয়েছেন। তবে ছাত্রলীগের অভিযোগ, দুপুরে হলের ডাইনিংয়ে খাওয়ার সময় এক শিক্ষার্থী খাবারে সিগারেটের একটি অংশ দেখতে পান। সেখান থেকে আন্দোলন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
হল প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তহল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতায় যোগ্যদের হল থেকে জার্সি–সরঞ্জামসহ প্রতিদিনের প্র্যাকটিসে খাবারের জন্য একটি নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ থাকে। নবাব আবদুল লতিফ হলের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাসকিফ আল তৌহিদ ছাত্রলীগের ২০ নেতা-কর্মীর একটি তালিকা দিয়ে তাদের হল প্রশাসন থেকে জার্সি দেওয়ার কথা বলেন। তবে এতে প্রাধ্যক্ষ সায় দেননি।
গতকাল দুপুরে হলের ডাইনিংয়ে খেতে যান মনির হোসেন নামের ছাত্রলীগের এক কর্মী। খাবারের মধ্যে তিনি সিগারেটের একটা অংশ দেখতে পান। পরে ডাইনিং কর্মচারীদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে উপস্থিত আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে ডাইনিং ভাঙচুর করেন এবং গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে হলের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেন তারা।
বহিষ্কারের সুপারিশপ্রাপ্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন, হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাসকিফ আল তৌহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান।
এ বিষয়ে নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ.এইচ.এম. মাহবুবুর রহমান বলেন, আজ সকালের মিটিংয়ে গতকালের ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা সুপারিশ করেছি। এ ঘটনার জন্য প্রশাসন দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীকালে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, আমরা প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সকল কথা শুনেছি। অভিযুক্তদেরও কথা শুনব। তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।