শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- বিশ্বাস করা, স্বীকার করা ও আস্থা স্থাপন করা।
শরিয়তের পরিভাষায় ঈমান হলো, মহানবী সা: আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে দ্বীন হিসেবে অপরিহার্য যেসব বিষয় নিয়ে এসেছেন সেগুলোকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করা ও মেনে নেয়ার সাথে সাথে দৃঢ়বিশ্বাস ও প্রত্যয় ব্যক্ত করার নাম। ঈমান আনার কারণে ঈমানদার ব্যক্তি চিরকালের জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। পক্ষান্তরে ঈমান বর্জনকারী কাফের ও বেঈমান লোক অনন্তকাল জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে!
ঈমান আল্লাহ প্রদত্ত এক অনন্য নিয়ামত! এই নিয়ামত প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতিকে ধন্য ও সম্মানিত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না, বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন।’ (সূরা হুজুরাত : ১৭)
মানুষের ঈমান কমে ও বাড়ে। সৎ কাজের মাধ্যমে ঈমান কমে এবং অসৎ কাজের মাধ্যমে ঈমান বৃদ্ধি পায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ
যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বৃদ্ধি পায়। (সূরা ফাতহ, আয়াত : ৪)
আরও বর্ণিত হয়েছে,
وَزِدْنَاهُمْ هُدًى
আমি তাদের হেদায়াতকে (ঈমানকে) বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। (সূরা কাহ্ফ, আয়াত : ১৩)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন,
وَيَزِيدُ اللَّهُ الَّذِينَ اهْتَدَوْا هُدًى
যারা সঠিক পথপ্রাপ্ত আল্লাহ তাদের হেদায়াতকে (ঈমানকে) আরও বাড়িয়ে দেন। (সূরা মারইয়াম, আয়াত : ৭৬)
ঈমানের অনেক শাখা আছে। এরমধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বনিম্ন শাখা নিয়ে এক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,
‘ঈমানের ৬০ টি কিংবা ৭০ টি শাখা রয়েছে, তার মধ্যে সর্বোত্তম শাখা হচ্ছে ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই’- একথার স্বীকৃতি দেওয়া আর সর্বনিম্ন স্তরের শাখা হচ্ছে- রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা। লজ্জাও ঈমানের অংশ। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)।
আনাস রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন,
‘তোমরা ততক্ষণ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ তোমার জন্য যা পছন্দ করো তোমার ভাইয়ের জন্যও তা পছন্দ না করবে। (সহিহ বুখারি)
জারির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেছেন,
‘আমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা করবো, জাকাত আদায় করবো এবং প্রত্যেক মুসলিমের কল্যাণ কামনা করবো এই শর্তে রাসূলুল্লাহ সা.-এর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছি।' (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)।