বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে প্রহসনমূলক সর্বজনীন পেনশন স্কিম চাপিয়ে দেয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আব্দুল আলিম এবং সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আমীরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে:
নিম্ন আয় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠিকে পেনশনের আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রণীত সর্বজনীন পেনশন স্কিম আইন ২০২৩ আগামী ১ জুলাই ২০২৪ থেকে চালু করার ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান ‘ডামি’ সরকার। নামে সর্বজনীন হলেও প্রশাসন, পুলিশ, প্রতিরক্ষা, বিচার বিভাগসহ রাজস্ব খাতের অন্যান্য কর্মচারীদের সুকৌশলে এই স্কিমের বাইরে রেখে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। বেশ ক’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে শিক্ষকগণ ইতোমধ্যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। আমরা মনে করি, ব্যাপক দুর্নীতিগ্রস্থ অবৈধ সরকারের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার ব্যর্থ প্রয়াসের অংশ হিসাবে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত সামনে এনে জনগনকে বোকা বানিয়ে সরকার লুটপাটের নুতন খাত উন্মোচন করতে চায়। এই নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে নতুন নিয়োগ প্রাপ্তরা নতুন স্কিমে যুক্ত হলে তা নতুন পুরাতনদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। এ ছাড়াও স্বাভাবিক পদোন্নতির পরিবর্তে যাঁরা বিজ্ঞাপিত উচ্চতর পদে যোগদান করবেন তাদের ক্ষেত্রে পেনশন নীতিমালায় জটিলতা সৃষ্টির আশংকা আছে। বর্তমানে মেধাসম্পন্ন ব্যক্তিগণ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত হওয়ার অন্যতম কারণ হল চাকরিতে সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বৈষম্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের মেধার সঠিক মূল্যায়ন না হওয়ায় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি মেধাশুন্য হয়ে পড়ছে ও দক্ষ নাগরিক গড়ে তোলার কাজ ব্যহত হচ্ছে। জাতির জন্য এটা একটি অশনির সংকেত বটে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে আরও বলা হয়েছে, নতুন পেনশন স্কিম চালু হলে শিক্ষকগন আরেক দফা অবমূল্যায়নের শিকার হবেন বলে আমরা মনে করি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র পে-স্কেল থাকলেও আমাদের দেশে তা কল্পণাতীত। বরং, দেশের অধিকাংশ সরকারি চাকরিজীবির তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ পেশাগত সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছেন। জাতির মেরুদন্ড শিক্ষাকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রে দেশী-বিদেশী একটি প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বেতন কাঠামো, পেনশন ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে স্বায়ত্বশাসন আজ হুমকির সম্মুখীন। তাই, দল-মতের উর্দ্ধে উঠে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মীগণকে একসাথে সোচ্চার হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উদাত্ত্ব আহবান জানাচ্ছে।