২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৮:৩৪:২৮ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীতে পুলিশ কনস্টেবলের নামে দুদকের মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৫-২০২৪
রাজশাহীতে পুলিশ কনস্টেবলের নামে দুদকের মামলা রাজশাহীতে পুলিশ কনস্টেবলের নামে দুদকের মামলা


রাজশাহীতে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মেহেদী হাসান নামের পুলিশের এক কনস্টেবলের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুরের চকবিজলী গ্রামের বাসিন্দা। ওই পুলিশ কনস্টেবল তার অবৈধ সম্পদ বৈধ দেখাতে ৪৮টি নন—জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে জমি বন্ধক রেখে ১৮ লাখ ও ৩৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ দেখান। দুদক অনুসন্ধান করে দেখেছে, জমি বন্ধক সেই ঋণচুক্তির স্ট্যাম্পগুলো নকল।

মেহেদী হাসান নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত। তার বিপি নম্বর—৮৮০৬১০৮৭০১। 

নকল স্ট্যাম্পে মিথ্যা বন্ধকিপত্র দাখিল করে এবং আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা অর্জনের অপরাধে কনস্টেবল মেহেদী হাসানের নামে দুদক আইন—২০০৪—এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য মামলার এজাহার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতেও পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) দুপুরে ৬২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে কনস্টেবল মেহেদী হাসানের নামে মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং নকল স্ট্যাম্প দুদকে জমা দিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক এর সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইনের করা এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আয়বহিভূর্ত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেলে মেহেদী হাসানকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য বলা হয়। তখন মেহেদী হাসান ৪৮টি স্ট্যাম্পে লিখিত ও স্বাক্ষরিত চুক্তি সম্বলিত রেকর্ডপত্র দাখিল করেন। এসব স্ট্যাম্পে আটজনের সঙ্গে জমি বন্ধক রাখা বাবদ ১৮ লাখ টাকা এবং আরও আটজনের কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ দেখান। ওই স্ট্যাম্পগুলো ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাটের স্ট্যাম্প ভেন্ডার সাইদুল ইসলাম বিক্রি করেছেন বলে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে। তবে দুদক জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচাই করে দেখেছে, ট্রেজারি শাখা থেকে এসব স্ট্যাম্পের মধ্যে ৪২টি ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ও ৬ সেপ্টেম্বর ভেন্ডার সানোয়ার হোসেন দেলু এবং ৬টি ২০১৭ সালের ২২ জুন শহীদুল ইসলাম নামের এক ভেন্ডারের কাছে সরবরাহ করা হয়।

আর সানোয়ার হোসেন দেলুর বক্তব্য ও তার বিক্রয় রেজিস্ট্রার যাচাই করে মেহেদী হাসানের দাখিল করা স্ট্যাম্পগুলোর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। মেহেদী হাসান অসৎ উদ্দেশ্যে তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে এ ধরনের নকল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র ও বন্ধকি সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য দিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদক জানায়, মেহেদী হাসানের নামে মোট ৯১ লাখ ২৪ হাজার ২৫৪ টাকার অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। তার ঋণের পরিমাণ ৯ লাখ ৩০ হাজার ৮৭০ টাকা। ঋণ বাদে অর্জিত সম্পদের নিট মূল্য ৮১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮৪ টাকা। এছাড়া মেহেদীর বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৩ টাকা পারিবারিক ব্যয় করেছেন। ঋণের কিস্তির সুদ পরিশোধ করেছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৭ টাকা। ফলে তার মোট সম্পদ পাওয়া যায় ৯৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪ টাকার। আর তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৪ টাকা। ফলে তিনি অসৎ উপায়ে আয়বহিভূর্ত ৬২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখল করে তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।