২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১০:৫০:০৫ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীতে প্রবেশনে থাকা ৪১ শিশু-কিশোরের মুক্তি
মঈন উদ্দিন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৩-২০২৪
রাজশাহীতে প্রবেশনে থাকা ৪১ শিশু-কিশোরের মুক্তি রাজশাহীতে প্রবেশনে থাকা ৪১ শিশু-কিশোরের মুক্তি


রাজশাহীতে ৩৪টি মামলায় ৪১ শিশু-কিশোরকে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৫ মার্চ) রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান এ আদেশ দেন।

আদালতে ৪১ শিশু-কিশোরের মধ্যে ৩৫ জন উপস্থিত ছিলেন। সংশোধনের জন্য প্রবেশনে থাকা ৩৫ শিশু আর কোন অপরাধে না জড়ানোর কারণে তাদের হাতে ফুল আর জাতীয় পতাকা দিয়ে চূড়ান্ত মুক্তি দিয়েছেন রাজশাহীর শিশু আদালত-২।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাজশাহীতে শিশু আইনে হওয়া মামলার মধ্যে মাদক সেবন ও বহন এবং মারামারির মতো ঘটনায় ৩৪টি মামলায় আসামি হয়েছিল ৪১ জন। প্রথমবারের মতো এমন অপরাধে অপরাধী হওয়ায় বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান তাদের মুক্তি দেন।

জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রবেশন বলতে বোঝায় কোনো অপরাধীকে তার প্রাপ্য শাস্তি স্থগিত রেখে ও কারাগারে না পাঠিয়ে সমাজে খাপ খাইয়ে চলার সুযোগ দেওয়া। প্রবেশন ব্যবস্থায় প্রথম ও লঘু অপরাধে দ-িত শিশু-কিশোর বা অন্য কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে কারাগারে না পাঠিয়ে আদালতের নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নিজ বাসায় বা পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়।

আদালত এই শিশুদের কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের জন্য প্রবেশন বিভিন্ন মেয়াদে প্রবেশন দিয়েছিলেন। বাড়িতে থেকে তাদের বই পড়া, বাবা-মায়ের সঙ্গে সুন্দর আচরণ, একই অপরাধ আবার না করা কিংবা কোন অপরাধেই না জড়ানোসহ বেশকিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল। প্রবেশন কর্মকর্তা দুই মাস পর পর তাদের কার্যক্রমের ওপর আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছেন। এমন তিনটি প্রতিবেদনের পর প্রবেশন কর্মকর্তা একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। সেই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি করে শিশুদের চূড়ান্ত মুক্তি দেওয়া হয়।

আদালতের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামসুন্নাহার মুক্তি ও জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান শিশুরা আদালত থেকে বের হওয়ার সময় প্রত্যেক শিশুর হাতে একটি করে গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুল তুলে দেন। এছাড়া তাদের একটি করে কাগজের জাতীয় পতাকা দেওয়া হয়। আদালতের এমন উপহার পেয়ে শিশুরা খুশিমনে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরে।

মুক্তি পাওয়া মঞ্জুরুল ইসলাম বলে, আমার বিরুদ্ধে মাদকের মামলা ছিল। আমাদের ভালো হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। অসৎ সঙ্গ পরিহার করতে বলেছে। আমি সেই ভাবে চলেছি। 

অপর মুক্তি পাওয়া আব্দুল কদ্দুস বলেন, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমাদের ভালোভাবে জীবনযাপনের সুযোগ করে দিয়েছে। প্রবেশনে থাকা অবস্থায় আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী সব কাজ করেছি। আমরা আর এ ধরনের কাজে জড়াবো না।