স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের পেনশন নিয়ে সম্প্রতি জারি করা প্রজ্ঞাপনকে বৈষম্যমূলক, সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ও বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শনের চেতনার পরিপন্থী বলে আখ্যায়িত করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (RUTA)। এসআরও নং-৪৭-আইন/২০২৪ স্মারকে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ওমর ফারুক সরকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে প্রচলিত সরকারি পেনশনব্যবস্থা নিয়ে গত ১৩ মার্চ যে সরকারি প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে তাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চরম হতাশ ও বিস্মিত হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে যেভাবে সকল স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও এর অধীনস্থ' অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে আগামী ১ জুলাই ২০২৪ তারিখ থেকে যোগদানকৃতদের সর্বজনীন পেনশন
ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা বৈষম্যমূলক।
একই বেতন স্কেলে আগে নিয়োগকৃতরা পেনশনের ক্ষেত্রে যেসব সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হবেন নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা তা থেকে বঞ্চিত হবেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উক্ত সময়ের পরে যোগদানকৃত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই প্রজ্ঞাপনের আওতায় অবসরকালীন সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হবেন। এতে করে তাদের কর্মজীবনে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করবে।
সরকারের জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করার কোনো গভীর চক্রান্ত কি না—এমন প্রশ্ন রেখে রাবি শিক্ষক সমিতি জানায়, এ ধরনের বৈষম্য বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে শিক্ষাদর্শনের চেতনা থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন এই প্রজ্ঞাপন সেই চেতনাকে অবজ্ঞা ও অবমাননা করার শামিল। হঠাৎ করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার কর্মচারীদের মধ্যে এমন বৈষম্যমূলক নীতি প্রণয়নের প্রয়োজন কেন পড়ল তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বোধগম্য নয়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছেন তখন কি ভেতরের কোনো ষড়যন্ত্রী গোষ্ঠী সরকারকে সাংঘর্ষিক অবস্থায় ফেলতে চাইছে? এমন প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবার পরে এটি কি সরকারের জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করার কোনো গভীর চক্রান্ত কি না তাও জানতে চায় রাবি শিক্ষক সমিতি।
এসআরও নং-৪৭-আইন/২০২৪ স্মারকে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতিতে সরকারের সকল স্তরের কর্মচারীদের মধ্যে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি উদার্ত আহ্বান জানানো হয়।