নাটোরে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে রাজশাহী মহানগরীর ৪জন ভুয়া সাংবাদিককে আটক করেছে সাধারণ জনতা। পরে তাদের নাটোর সদর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছেন তারা।
আটককৃতরা হলো: মোঃ সাঈদ হাসান পিন্টু (৪৬) সে, রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানার অক্ট্রয়মোড় (কাজলা), বিলপাড়া এলাকার মোঃ আব্দুস সাত্তরের ছেলে, মোঃ নূর জামান ইসলাম (৪২), সে মহানগরীর কাটাখালী থানার পাক ইসলামপুর (গুয়াবাসিনা), এলাকার মৃত জনাব আলীর ছেলে, একই এলাকার মোঃ আবু তালেবের ছেলে মোঃ সুরুজ আরিয়ান (২৬) ও একই থানার দেওয়ানপাড়া এলাকার মোসাঃ পাপিয়া (২০)।
শনিবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি জানান, কোয়েল নামের স্থানীয় এক সরকার দলীয় নেতার কাছে পিন্টু নামের একজন ভুয়া সাংবাদিক মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে বলে, আমি সাংবাদিক। আমি রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বে আছি। আপনি কোথায় আছেন ? এরপর নেতার দেয়া ঠিকানায় গিয়ে ভুয়া সাংবাদিকরা কোয়েলকে বলে আপনার নামে অনেক কিছু শুনছি। আমরা নিউজ করবো না যদি আপনি ৫০ হাজার টাকা দেন। এরপর ২০ হাজার টাকায় নামেন। তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে, নেতা কোয়েল নাটোর প্রেসক্লাবে ফোন দিয়ে কয়েকজন সাংকবাদিক ডাকেন। এরপর সেখানে প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা উপস্থিত হয়ে কথা বলে জানতে পারেন, ধোকাবাজি, চাঁদাবাজি, আর প্রতারণাই তাদের কাজ। তারা প্রকৃত কোন সাংবাদিক নহে। এ সময় তারা নাটোর সদর থানায় ফোন দিয়ে বিয়য়টি অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় প্রদানকারী ৪জন প্রতারককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকার তল্লাশী করে কয়েকটি তাজা মাছ উদ্ধার করে। অর্থাৎ তারা নাটোরে কোন এক পুকুরের মালিকের কাছে মাছ চাঁদাবাজি করেছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে হ্যালো নাটোর নামের একটি ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভ দেয়া হয়। সেখানে রাজশাহী থেকে নাটোরে গিয়ে সাংবাদিক নামধারী কতিপয় প্রতারকরা বিভিন্ন লোকজনের সাখে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়া-সহ চাঁদাবাজির সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন। ওসি আরও বলেন, সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে ভুক্তভোগী কোয়েল বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন। এরপর তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, ক্যামেরা, টিভির সাংবাদিকের মতো তাদের ব্যবহৃত বুম, ভুয়া সাংবাদিকতার কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
আজ রবিবার সকালে তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে বলেও জানান ওসি।
এদিকে, হ্যালো নাটোর ফেসবুকের লাইভ ভিডিও ডাইনলোড করে সচেতনাতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজশাহী মহানগরীর একাধিক সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ ফেসবুকে ওই চারজন ভুয়া সাংবাদিকের ভিডিও প্রচার করতে দেখা গেছে।
মূলধারার একাধিক সাংবাদিক বলেন, প্রকাশ হয় এমন প্রত্যেকটি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, থানা প্রতিনিধি ও ব্যুরো নিয়োগ দেয় সংশ্লিষ্ট পত্রিকার কর্তৃপক্ষ। সাধারণ মানুষ যদি সচেতন হয়। তাহলে রাজশাহীর নামধারী ভুয়া সাংবাদিকরা জেলা, উপজেলা, থানা পর্যায়ে ফাঁপড়বাজী বা চাঁদাবাজি করতে পারবে না। তারা আরও বলেন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল চালু হওয়ার পর থেকে হালুয়া রুটি ভিক্ষা করার মতো প্রত্যান্ত গ্রামঞ্চলে এইসব প্রতারক অনলাইন ডটকম এর সাংবাদিকদের ব্যাপক উৎপাত বেড়েছে। যেমন: ইটভাটা, পুকুর খনন, পুকুর ভরাট, বেকারী এবং মাদকপল্লী ইত্যাদি স্থানে গিয়ে ফাঁপড়বাজী করে চাঁদা আদায় করাই তাদের একমাত্র কাজ। কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা সংবাদ লিখে না। তবে সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেয়।
আজ ঘটে যাওয়া ঘটনায় জন্য নাটোর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ ও নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজশাহীর মূল ধারার সাংবাদিকবৃন্দ।