২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৫:৪৩:০০ অপরাহ্ন


জার্মানির সহায়তায় গাজা থেকে ৬৮ শিশু উদ্ধার, ক্ষুব্ধ ইসরাইল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৩-২০২৪
জার্মানির সহায়তায় গাজা থেকে ৬৮ শিশু উদ্ধার, ক্ষুব্ধ ইসরাইল জার্মানির সহায়তায় গাজা থেকে ৬৮ শিশু উদ্ধার, ক্ষুব্ধ ইসরাইল


গাজার একটি দাতব্য কেন্দ্র থেকে শিশু ও কর্মীদের পশ্চিম তীরে সরিয়ে নিতে সহযোগিতা করেছে জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে এই স্থানান্তরে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইসরাইলের উগ্র ডানপন্থি রাজনীতিবিদেরা।

জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর ডিডাব্লিউকে জানিয়েছে, সোমবার ৬৮ জন শিশুর পাশাপাশি ১১ জন কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের রাফার এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ থেকে পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে ‘‘অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।''

পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানান, রাফাতে পরিচালিত দাতব্য কেন্দ্রটির জন্য সহযোগিতা চেয়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ নামের এনজিওটি।

ওই মুখপাত্র ডিডাব্লিউকে আরো বলেন, ‘‘আমাদের এই নিবিড় প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল (সোমবার) হয়েছে বলে স্বস্তি লাগছে এবং এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই।''

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুর নিচে কোনো রকম দিন কাটাচ্ছেন। ইসরাইলি চেকপয়েন্ট এবং ওই উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান সামরিক অভিযানের কারণে গাজায় সাহায্য পৌঁছানো বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দাতব্য সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সেখানে মজুত খাদ্য ও সরবরাহ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, রাফাতে থাকা হামাস সদস্যদের নির্মূল করতে অভিযান চালানোর কথা বলে আসছে ইসরাইল। কিন্তু সেখানে পূর্ণমাত্রায় হামলা করা হলে গুরুতর মানবিক বিপর্যয়ের ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির মতো দেশগুলো। ইসরাইল আরো জানিয়েছে, যে-কোনো সামরিক অভিযানের আগে রাফা শহরের কিছু অংশ খালি করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন তারা।

ইসরাইলের সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, সরকারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার সুস্পষ্ট অনুমোদন ছাড়াই জার্মানির অনুরোধে অপারেশনটি সমন্বয় করেছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।

শিশুদের সরিয়ে আনার এই পদক্ষেপটির সমালোচনা করেছেন ইসরাইলের অতি-ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। এই অভিযানটিকে ‘নৈতিক ব্যর্থতা' হিসাবে আখ্যায়িত করে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কাছে এর জবাবও চেয়েছেন তিনি।

ইসরাইলের চ্যানেল টুয়েলভ নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই উদ্ধার অভিযান বা স্থানান্তর প্রক্রিয়াটি ‘‘গাজায় জিম্মি এবং তাদের পরিবারের প্রতি হাস্যকর এবং অনৈতিক আচরণ।’’

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের সন্ত্রাসী হামলার সময় ২৫০ ইসরাইলিকে জিম্মি করে জঙ্গিরা। ইসরাইল বিশ্বাস করে, গাজায় তাদের মধ্যে ১৩০ জন বন্দি রয়েছেন, যাদের ৩২ জন এর মধ্যে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়।

পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতিতে পৌর সেবা দিয়ে আসছে গুশ এটজিয়ন আঞ্চলিক পরিষদ নামের একটি সংস্থা। ৬৮ জন শিশুকে যে পথ ধরে সরিয়ে আনা হয়েছে, সেই পথে নেমে উদ্ধার অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির বিদায়ী চেয়ারম্যান শ্লোমো নে'মান।