মিস ওয়ার্ল্ডের ৭১তম আসরের শুরু থেকেই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে বারবার উঠে আসছিল ক্রিস্টিনা পিসকোভার নাম।
শনিবার রাতে মুম্বাইয়ের জিও কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত চূড়ান্ত পর্বের রাতে শেষ হাসি হাসল ইউরোপের দেশ চেক প্রজাতন্ত্র। এই বছরের মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জিতেছেন পিসকোভা। ১১৫ টি দেশের প্রতিযোগীরা এখানে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে এবার এই খেতাব জিতলেন ক্রিস্টিনা।
ক্রিস্টিনা পিসকোভার মাথায় এ দিন মুকুট তুলে দেন ২০২২ সালের পোলিশ বিজয়ী ক্যারোলিনা বিলস্কা। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ভারতের মাটিতে আয়োজিত হয়েছে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতা। ১২ জন বিচারকের প্যানেলে ছিলেন বলিউড তারকা কৃতি শ্যানন ও পূজা হেগড়ে। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ২০১৩ সালের ফিলিপিনো-মার্কিন বিশ্বসুন্দরী মেগান ইয়ং ও বলিউডের প্রযোজক করণ জোহর।
প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী, শেষ ধাপে উঠে আসা আট প্রতিযোগীকেই একটি করে প্রশ্ন করা হয়। বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর দিয়ে যাঁরা মেধার পরিচয় দিতে পারেন, তাঁরাই থাকেন এগিয়ে। কোনও প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এ দিন বাজিমাত করেন ক্রিস্টিনা? এ বছর ৭১তম মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যন্ত মুকুট উঠেছে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধি ক্রিস্টিনা পিসকোভার মাথায়। মঞ্চে করণ জোহর তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘নারীদের স্বাস্থ্যসেবার একটি বিষয়ে যদি আপনাকে আলোকপাত করতে বলা হয়, আপনি কোন দিকটির কথা বলবেন? এবং কেন?’
শান্ত স্বরে ঠোঁটে মৃদু হাসি রেখে ক্রিস্টিনা বলেছেন, ‘আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আমি মনে করি, নারী হিসেবে জন্ম নেওয়া একটা বড় উপহার। সারা বিশ্বের নারীদের প্রতিনিধি হিসেবে এই মঞ্চে আসতে পেরে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ,’—এই ছিল তাঁর ভূমিকা। এরপর করণের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নারী স্বাস্থ্যের যে বিষয়টির গুরুত্ব কখনোই ভোলা উচিত নয়, তা হলো মাসিক। কারণ, পৃথিবীর অনেক দেশেই এখনো নারীরা এ নিয়ে কথা বলতে সংকোচ বোধ করেন, ভয় পান। যে মনোযোগ তাঁদের পাওয়া উচিত, সেটা তাঁরা পান না।’
একই প্রশ্ন করা হয়েছিল ইংল্যান্ডের সুন্দরী জেসিকা অ্যাশলেকেও। উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘নারী স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সহানুভূতির অভাব আর কুসংস্কার—দুটি দিকেই আমি আলোকপাত করব। পৃথিবীর অনেক নারী দারিদ্র্যের কারণে মাসিকের সময় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পারেন না। নারী হিসেবে তাঁরা লজ্জিত বোধ করেন। অনেক মেয়ে স্কুল কামাই করে এই সমস্যার কারণে। স্বাধীন, শক্তিশালী নারী হিসেবে আমরা যাঁরা আজ নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, আমি মনে
মিস চেক প্রজাতন্ত্র হওয়ার আগে থেকেই ২৫ বছর বয়সী ক্রিস্টিনা প্রতিষ্ঠিত মডেল হিসেবে কাজ করেছেন বিশ্বের সেরা ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলির সঙ্গে। ১৯৯৯ সালের ১৯ জানুয়ারি চেক প্রজাতন্ত্রের ট্রিনেচ শহরে জন্ম এই সুন্দরীর, বেড়ে ওঠা রাজধানী প্রাগে। ক্রিস্টিনার হাত ধরে এবার দ্বিতীয়বারের মতো মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জেতার সম্মান অর্জন করল চেক প্রজাতন্ত্র। এর আগে ২০০৬ সালে মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুট পরেছিলেন তাঁর স্বদেশি তাতানা কুচারোভা।
প্রাগের চার্লস ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন পিসকোভা। এখন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ নিয়েও পড়ছেন। ২০২২ সালে তিনি মিস ওয়ার্ল্ড চেক প্রজাতন্ত্র নির্বাচিত হন। ফলে নিজেকে মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুটের যোগ্য দাবিদার হিসেবে তৈরির জন্য তিনি প্রায় দুই বছর সময় পেয়েছেন। ২০২৩ সালে শিডিউল জটিলতার কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি এই সুন্দরী প্রতিযোগীতা।