পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নিরাপত্তাবিষয়ক কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ। সেখানে এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা কম্পিউটারে কাজ করার সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন মরিয়ম। হঠাৎ ওই পুলিশ কর্মকর্তার মাথা থেকে ওড়নাটি সরে যায়। তখন মরিয়ম সেটি ঠিক করে দেন।
মরিয়মের জনসংযোগকারী দল ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে শেয়ার করেছে। ক্যাপশনে একে ‘সহানুভূতি ও বোঝাপড়ার মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে ভিডিওটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মরিয়মকে সমর্থন দিচ্ছেন। আবার কেউ বলছেন, মরিয়ম ওই পুলিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন এবং তাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন।
ডনের নিজস্ব ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি শেয়ার করে জরিপ চালানো হয়েছিল। পাঠকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কাজটি ঠিক হয়েছে কিনা। জবাবদাতাদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ বলেছেন, কাজটি ঠিক আছে। আর অন্যরা বলছেন, মরিয়ম নৈতিক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। কাজটি ঠিক হয়নি। তারা আরও অভিযোগ করেছেন, মরিয়ম বাস্তব আলোচনার চেয়ে ব্যক্তির পোশাক-আশাককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
কেউ কেউ বলছেন, মরিয়ম ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার ওড়না ঠিক করে দিয়েছেন। এতে আরও অনেকে নারীদের ওপর নিজেদের ধর্মীয় গোঁড়ামির চর্চা করতে উদ্বুদ্ধ হবেন।
ইন্টারনেটে একজন বলেছেন, মরিয়মের এখানে কিছুই করার দরকার ছিল না। এটা যেমন ছিল, তেমনই থাকত। ওড়না ঠিক করে দেওয়াটা মুখ্যমন্ত্রীর কাজ নয়।
তবে যারা মরিয়মের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তারা বলছেন, প্রেক্ষাপটটি ভিন্ন ছিল। ওই কর্মকর্তা আগে থেকেই মাথায় ওড়না পরা ছিলেন এবং সেটি পড়ে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী তা ঠিক করে দিয়েছিলেন। একে ‘শ্রদ্ধা ও সুরক্ষার প্রতীক’ বলে উল্লেখ করেছেন তারা। মরিয়ম-সমর্থকেরা যুক্তি দেখিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী কাউকে হিজাব পরার জন্য বা মাথা ঢেকে রাখার জন্য জোর করেননি।
বুধবার পিএমএল-এন নেতা আজমা বোখারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা কাজ করার সময় তার ওড়না পড়ে গিয়েছিল। মরিয়ম তাৎক্ষণিকভাবে মা-বোনের মতো মমতা নিয়ে সেটি ঠিক করে দিয়েছেন, যেন তিনি তার সন্তানের সঙ্গেই তা করছেন।