ইজরায়েলি সেনার অভিযানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। হামাস জঙ্গিদের শেষ করতে গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্র তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। বাদ যাচ্ছে না রাফা শহরও। দিনদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। যার ফলে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে একাধিকবার রাষ্ট্রসংঘে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। এবার নাকি থামতে চলেছে যুদ্ধ! খুব শীঘ্রই এনিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এমনটাই আভাস পাওয়া গেল মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য থেকে।
রয়টার্স সূত্রে খবর, সোমবার নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাইডেন। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে। যার উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি আশা করছি, সামনের সোমবার অর্থাৎ ৪ মার্চ থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হতে পারে। কাতারে খুব শীঘ্রই এনিয়ে যুদ্ধরত দুপক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। পাশাপাশি নজরে রাখা হয়েছে পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়টিকেও। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” তাহলে কি সত্যিই ছেদ পড়তে চলেছে চার মাস ধরে চলা এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের? আগামিদিনে গাজার ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে সেদিকেই নজর রয়েছে ওয়াকিবহাল মহলের।
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই হামাসের তরফে তিনদফা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি সংঘর্ষ বিরতির মেয়াদ হবে ৪৫ দিন। প্রথম দফার বিরতিতে হামাসের হাতে অপহৃত ১৯ বছরের নিচের পুরুষ-মহিলা, বয়স্ক এবং অসুস্থ ইজরায়েলি নাগরিককে ছাড়া হবে। পরিবর্তে ইজরায়েলের জেলে থাকা দেড় হাজার প্যালেস্তিনীয় মহিলা ও শিশুকে ছাড়তে হবে। দ্বিতীয় দফায় ছাড়া হবে বাকি পুরুষ অপহৃতদের। তৃতীয় দফায় দুপক্ষের মধ্যে দেহ ও দেহাবশেষ আদানপ্রদান। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ধ্বংশাবশেষে পরিণত হওয়া গাজা স্ট্রিপের পুনর্গঠন শুরু হবে। ধীরে ধীরে ওই ভূখণ্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসবে ইজরায়েলি সেনা। তৃতীয় দফা সংঘর্ষ বিরতির মধ্যে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করার চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এর মাঝেই গাজায় প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার, পানীয় আরও বেশি করে পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
বলে রাখা ভালো, যুদ্ধ বিধ্বস্ত রাফার পরিস্থিতির কারণে কয়েকদিন আগে প্রথমবার রাষ্ট্রসংঘে ইজরায়েল-হামাস সংঘাতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পেশ করেছিল ‘উদ্বিগ্ন’ আমেরিকা। খসড়াটিতে হামাসের ডেরা থেকে ইজরায়েলি পণবন্দিদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়েছিল। মানবিক সহায়তা জারি রাখার পাশাপাশি সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানানো হয়েছিল। এমনকী, রাফায় ইজরায়েলি বাহিনীর হামলার বিরোধিতাও করা হয়েছিল। ফলে চাপ বাড়ছে নেতানিয়াহুর প্রশাসনের উপর।